30th Apr 2024
ভ্রমণ
নিজস্ব প্রতিনিধি
বিদেশ ঘুরতে চাই ঠিকঠাক তথ্য! না হলে খরচাটাই জলে! রইলো সাগরপার সফরের সম্পূর্ণ তথ্য।
ব্রিটেন, স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড
কী কী দেখবেন:
ব্রিটেন:
গ্রেট ব্রিটেন একটি দ্বীপ। দ্বীপটি ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলস, এই তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত। এই তিন অঞ্চলের রাজধানী যথাক্রমে লন্ডন, এডিনবার্গ ও কার্ডিফ। টেমস নদী তীরে লন্ডন ২০০০ বছর পুরোনো শহর। এখানে চারটি বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানছাড়াও আছে আকর্ষণীয় স্থাপনা ও মিউজিয়াম।
লন্ডনের আর্কষন:
হাইড পার্ক এবং কেনসিংটন গার্ডেন; ব্রিটিশ মিউজিয়াম: বিজ্ঞান যাদুঘর। ব্রেনহেইম প্যালেস, ভিক্টোরিয়া এন্ড আলবার্ট মিউজিয়াম, লন্ডন আই; রিজেন্ট পার্ক, মাডামটুসো ওয়াক্স মিউজিয়াম; টাওয়ার ব্রিজ, টাওয়ার অফ লন্ডন (এখানে কোহিনুর মণি রাখা আছে); বিগ কেন; ওয়েস্ট মিনিসটার আবে; হাউস অফ পার্লামেন্ট: লর্ডস ক্রিকেট স্টেডিয়াম, সেক্সপিয়র গ্লোব;
বাকিংহাম প্যালেস; আকুয়ারিয়াম; টেট ব্রিটেন, টেট মর্ডান, সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল প্রভৃতি। বৃহত্তর লন্ডন শহরে অবস্থিত গ্রীনিচ মানমন্দির, হ্যাম্পটন কোর্ট, নটিং হিল বা টেমদের উপর জলবিহারও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। শহর ছাড়িয়ে আর একটু গেলেই স্টোন এজ, উইন্ডশোর ক্যাসেল; বাঘ, হ্যারি পটার ট্যুরও করতে পারেন।
স্কটল্যান্ড:
স্কটল্যান্ড যুক্তরাজ্যের একটি অংশ। এডিনবার্গ স্কটল্যান্ডের রাজধানী।
এডিনবার্গের আকর্ষণ:
এডিনবার্গ ক্যাসেল, রয়াল ইয়ট ব্রিটানিয়া; রয়াল মাইল; গ্রেফিয়ার্স ক্রিক, কালটন হিল; এডিনবার্গ ওল্ড টাউন; ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ স্কটল্যান্ড; গ্লিমারটন কোত; হলিরুড পার্ক; এবং আর্থার সিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এডিনবার্গ থেকে এক দিনের ট্রিপে স্কটিশ হাইল্যান্ডস, লো ল্যান্ডস, লচনেস, গ্লেনসিয়, আইলস অফ ভাই এবং ওয়েস্ট হাইল্যান্ডেসও যাওয়া যায়; অপূর্ব সুন্দর এই জায়গা গুলো হার মানায় স্বর্গকে। বিস্তৃত পর্বতমালা, জলপ্রপাত, নদী, নদীর দুইধার ফুলে ফুলে বেগুনী হয়ে থাকে। ডানভেগান স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে পুরাতন ক্যাসল। ওল্ড ম্যানট্রেকিং অভিজ্ঞতা হবে চির স্মরণীয়। সূর্যাস্ত দেখুন এই পাহাড়ের চূড়া থেকে। এলগল থেকে নৌকা ভ্রমণ আরেক অভিজ্ঞতা। কুইলিন পর্বতমালায় ঘেরা এই জলাশয়ের জল স্ফটিকের মাত স্বাচ্ছা বোনের থেকে কাইলারহা যাওয়ার প্রথাটি ভীষণ সুন্দর। স্কটল্যান্ডে বিখ্যাত স্কচ হুইস্কি। বিভিন্ন ডিস্ট্রিলারীতে হুইস্কি টেস্টিং করারও বন্দোবস্ত আছে।
আয়ারল্যান্ড:
আয়ারল্যান্ড দ্বীপের সর্ববৃহৎ শহর, ডাবলিন নজরকাড়া শহরা অফিস, আদালত, হোটেল ও রেস্তোরাঁ, বার, পার্টি পয়েন্ট ছাড়াও শিল্প এবং সাহিত্যে ডাবলিন নগরীর রয়েছে বিশেষ সুখ্যাতি।
ডাবলিনের আর্কষন:
ক্রাইস্টচার্চ ক্যাথিড্রাল; ডাবলিন ক্যাসেল; ডাবলিনীয়া ও ভাইকিং ওয়াল্ড; গ্রাফটন স্ট্রিট, দ্য লিফি, মেরিয়ন স্কোয়ার; পারনেল স্কোয়ার, টেমপেল বার: ট্রিনিটি কলেজ এবং ন্যাশানাল মিউজিয়াম অফ আয়ারল্যান্ড অন্যতম।
এছাড়াও কিছু দূরেই বিশ্ব বিখ্যাত গিনিস বুক স্টোর বা ফিনিক্স পার্ক ও পর্যটকদের নজর কাড়ে। আয়ারল্যান্ডকে জানতে যানজায়েন্ট কাসাওয়ে (এখানে বিখ্যাত হলিউড সিনেমা গেমস অফ যোন মুতির সুটিং হয়েছিল), গান ওয়ে, ব্লরণে করলেন; উইকনো মাউন্টেন। গ্লেনডলফ, ক্লিফ অফ মোহের, লুনার বুরেন; ব্লারনে কাদেল ইন কক এবং রিং অব কেরি দেখতে। ক্লিফ অব মোহের, বিশাল সাদা পাহাড়ের অংশ বুক উঁচিয়ে আটলান্টিকের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। নিচে অসংখ্য সাদা শঙ্খচিল উড়ে বেড়াচ্ছে। শুধু কি ক্লিফ অব মোহেরা?
আয়ারল্যান্ডের অন্যতম আকর্ষণ রিং অব কেরি। এটা একটা পাহাড়ি রাস্তা। যার একপাশে আটলান্টিক, অন্যদিকে মালভূমি। গ্যাপ অব ডানলো হলো দুই পাহাড়ের মাঝখানে বিরাট এক হ্রদ। রিং অব কেরির পথে পাহাড়ের নিচে নামলে, দেখতে পাবেন আইরিশ। ঐতিহ্যবাহী বাড়ি, পেছনে পাহাড়, সামনে ঝরনা, তারপর বন। আর বনের বুক চিরেই রাস্তা। এই পথ দিয়ে গেলে হরিণের দেখা পাওয়া যায়। যাত্রা এখানেই শেষ না। কারণ রিং অব কেরির বাকি অংশ। পড়েছে আটলান্টিকের পাশে। সবুজ গ্রাম, মাঠে সাদা ভেড়ার পাল আপনাকে রিং অব কেরির আরেকটা সৌন্দর্যে নিয়ে যাবে। পাহাড়ের সরু আঁকাবাঁকা পথ, পাশে বিশাল খাদ, নিচে তাকালে নীল সাগর।
নর্দান আয়ারল্যান্ড:
বেলফাস্ট দেশটির রাজধানী। আয়ারল্যান্ড থেকে একদিনের ট্রিপে
বেলফাস্ট যাওয়া সম্ভব। এখানে পাবেন টাইটানিক কোয়ার্টার (ঐতিহাসিক জাহাজটির নির্মানস্থল); বেলফাস্ট সিটি হল; নদীন আয়ারল্যাণ্ড পার্লামেন্ট বিল্ডিাস; আলস্টার মিউজিয়াম: বোটানিক গার্ডেন, কুইন্স ইউনিভার্সিটি এর মতন বিখ্যাত আর্কষন। এখানকার বিখ্যাত ব্লাক টাক্সি ট্রার করালে দেশটার ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিন্তু জানতে পারবেন।
প্রয়োজনীয় তথ্য:
পাউন্ড স্ট্রালিং, এক পাউন্ড হল প্রায় ৯২ টাকার মত। আয়ারল্যান্ডে ইউরো চলে, এক ইউরো হল ৮১ টাকার মত। ইউকে বা আয়ারল্যান্ডে সর্বত্রই এটিএম মেশিন পাবেন।
ভাষা:
ইংরেজী, এছাড়াও স্কটিশ গেলিক, আইরিশ ওয়েলশ।
ভিসা ইউকে এবং আয়ারল্যান্ড ঘুরতে শুধুমাত্র ইউকে ভিসা পেলেই চলবে, যদিও আয়ারল্যান্ড স্যাংগেন অন্তর্ভুক্ত দেশ কিন্তু ইউকে ও আয়ারল্যান্ডের
ভিসা চুক্তি অনুযায়ী যে কোনও একটির ভিজিট ভিসা থাকলে অন্য দেশটিতে যাওয়া সম্ভব, তবে প্রথমে ভিসা পাওয়া দেশটিতে যেতে হবে, সেখান থেকে অন্য দেশটিতে ইউকে ভিসার জন্য বর্তমানে
আবেদন করতে হয় ভি এফ এস গ্লোবাল নামক একটি কোম্পানির
মাধ্যমে কলকাতার যোগাযোগ: UK Visa application centre, Fifth
floor, RENE tower, Plot No. AA-1, 1842, Rajdanga Main Road Kasba, Kolkata 700107 (আপয়েন্টমেন্ট এর সময় সোম। থেকে শুক্র, সকাল ৮:০০ থেকে দুপুর ২:০০ ) প্রথমেঅনলাইন আবেদন করতে হবে:https://www.gov.uk
ফর্ম ওসমস্ত কাগজপত্র অনলাইন আপলোড করতে হবে, ভিসা ফি দিতে হবে (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯০০০ টাকা), এবং ফিল করা ফর্ম এর কপি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করতে হবে (প্রতিটি লোকের জন্য আলাদা আলাদা অ্যাপ্লিকেশন লাগবে)। এর পর ভি এক এস গ্লোবাল এর
ওয়েবসাইটে (www.vfsglobal.co.uk/india/book_appointment. html) গিয়ে প্রতিটি অ্যাপ্লিকেশনের জন্য আলাদাভাবে অ্যাপয়েন্টমেন্ট
বুক করতে হবে।
ভিসা সংক্রান্ত শর্ত
* ভ্রমণের কারণ এবং তার প্রমাণ দিতে হবে।
* ভ্রমণের খরচ কে বহন করবে, কীভাবে যাবেন এবং কোথায় থাকবেন জানাতে হবে। অন্য কেউ খরচা দিতে তার ব্যাঙ্কের ছয় মাসের স্টেটমেন্ট দরকার হয়। জেনে রাখুন ভিসা পাওয়ার পূর্বশর্ত হিসাবে।
কখনওই ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স বেশি দেখাবার জন্য অতিরিক্ত টাকা শেষ ছয়মাসে জমা করবেন না।
* অনেক সময় সব কাগজ পত্র জমা দেওয়ার পরেও ও ভিসা অফিসার আপনাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে যদি আপনি ভ্রমণ শেষে ফেরত যাবার পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হন।
* অ্যাপয়েন্টমেন্ট (ফি হল ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২০০০০ টাকা) এরপরে আপ্লিকেশন গ্রহনযোগ্য হলে, বায়োমেট্রিক টেস্টিং করাতে হবে এবং তা ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারেই হয়। এরপর প্রসেসিং। সেখানে ঠিক হবে ভিসা দেওয়া হবে কিনা। প্রায় ২৯০০০ টাকা লাগবে, এবং পুরোটাই নন রিফান্ডবেল।
বাকি তথ্যের জন্য: www.earthtraveler.net
সেরা সময়:
মে মাসের শেষ আগস্ট মাসের শেষ।
কীভাবে যাবেন:
কলকাতা ডাবলিন যাওয়ার প্রচুর ফ্লাইট আছে, ইমিরেটস, কাতার, ইতিহাদ, জেট, এয়ার ইন্ডিয়া, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এবং ভিস্তারা। প্রায় ১২ থেকে ১৬ ঘন্টা সময় লাগে। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৫০০০০ থেকে ২০০০০০ টাকা ভাড়া (যাওয়া আসা সমেত)।
টুরিস্ট ইনফরমেশন:
গ্যাটউইক আর ডাবলিন এয়ারপোর্টে ট্রারিস্ট ইনফরমেশন কাউন্টার আছে, লন্ডন সিটির প্রধান রেল স্টেশন ভিক্টোরিয়া টামিনার্শেও টুরিস্ট ইনফরমেশন কাউন্টার আছে।
বেড়ানোর খরচ:
বাজেট ট্রিপ প্রতিদিন ৫৫ পাউন্ড মিডরেঞ্জ ট্রিপ প্রতিদিন ৫৫ থেকে ১৮০ পাউন্ড। হাইরেজ ট্রিপ করলে প্রতিদিনের খরচ ১৮০ পাউন্ডের বেশি।
ট্রাভেল প্ল্যানের জন্য: www.earthtraveler.net