13th Dec 2024

Highlights :

www.rojkarananya.com news

আমি দেবী অন্নপূর্ণা প্রকাশ কাশীতে...

29th Oct 2024

প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিনিধি


আদি শঙ্করাচার্য অন্নপূর্ণা স্তোত্রে লিখেছেন-

প্রালেয়াচলবংশপাবনকরী কাশীপুরাধীশ্বরী।

ভিক্ষাং দেহি কৃপাবলম্বনকরী মাতান্নপূর্ণেশ্বরী॥

অন্ন শব্দের অর্থ হলো ধান। আর পূর্ণা কথার অর্থ হলো পূর্ণ। মা দুর্গার আরেক রূপ হল অন্নপূর্ণা। মা অন্নপূর্ণা অন্নদা নামেও পরিচিত। মা অন্নপূর্ণা কে বলা হয় অন্নদাত্রী। তিনি শক্তির অপর রূপ। মা অন্নপূর্ণার এক হাতে থাকে অন্ন পাত্র অন্য হাতে থাকে হাতা।

নানান পুরান ও গ্রন্থে দেবী অন্নপূর্ণার উল্লেখ আছে। নানা কাহিনি প্রচলিত আছে মা অন্নপূর্ণা কে নিয়ে। এর মধ্যে অন্যতম হলো কাশি উপাখ্যান।
রায়্গুনাকার ভারতচন্দ্র দেবী অন্নপূর্ণার কথা উল্লেখ করে অন্নদামঙ্গল কাব্য রচনা করেছিলেন, যেখানে মা অন্নপূর্ণার মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে আর এক পৌরাণিক কাহিনী। পুরান মতে বিবাহের পর শিব পার্বতী সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের জেরে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। ভোলেনাথের সঙ্গে মায়ের মতবিরোধ হয়। মা পার্বতী কৈলাস ত্যাগ করে চলে আসেন। সেই সময় দেখা যায় মহামারি, খাদ্য কষ্ট। ভক্তরা আকুল হয়ে পড়ে, তারা দেবাদীদেবকে ডাকতে থাকে। সেই সময় ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন মহাদেব। কিন্তু দেবীর মায়ায় কোথাও ভিক্ষা জোটে না তার। তখন শোনা যায় কাশিতে এক নারী সকলকে অন্ন দান করছেন। ভোলানাথ সেখানে উপস্থিত হলে, ভোলেনাথের কিন্তু মাকে চিনতে একটু অসুবিধা হয় না। মহাদেব মায়ের কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করেন। সেই ভিক্ষা গ্রহণ করে মহামারী এবং খাদ্য ভাব থেকে ভক্তকুলকে রক্ষা করেন তিনি। এরপর কাশিতে মা অন্নপূর্ণার মন্দিরের স্থাপনা হয়। চৈত্র মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সেখানে মায়ের আবির্ভাব হয়েছিল, সেই থেকে সেখানে মায়ের পুজোর প্রচলন হয় যা আজ অন্নপূর্ণা পুজো নামে বিখ্যাত।
কাশী হল মা অন্নপূর্ণার অধিষ্ঠানক্ষেত্র। শৈব ও শাক্ত-সংস্কৃতির অপূর্ব মিলনস্থল। ১৭২৫ সালে দক্ষিণী রাজা বিষ্ণুপন্থজী আজকের মন্দিরটি নির্মাণ করে দেন। বিষ্ণুপন্থজী ছিলেন অন্নপূর্ণা মন্দিরের প্রসিদ্ধ মোহন্ত জগন্নাথ পুরীজির শিষ্য। তাঁর আমলেই মন্দিরটি আজকের আকার ধারণ করে। দেবী অন্নপূর্ণা আদিতে পাথরের বেদীতে বিরাজমান ছিলেন। পরে কালের প্রভাবে পাথরের আদি বেদী সহ প্রাচীন মূর্তিটি জীর্ণ হয়ে যাওয়ায় মূর্তিটি সোনার আবরণ ও বহুমূল্য রত্নে আচ্ছাদিত থাকে।অন্নপূর্ণা মন্দির চত্বরে কুবেরেশ্বরের ঠিক উপরের ঘরেই স্থাপিত সোনার অন্নপূর্ণা মূর্তি। বিশেষ বিশেষ তিথি পার্বণে এই দেবী বিগ্রহের দর্শন মেলে।অন্নপূর্ণা ট্রাস্ট আজও বিনাপয়সায় হাজার হাজার মানুষকে বিনাপয়সায় হাসিমুখে অন্ন বিতরণ করে চলে। রোদ-জল-ঝড়-বৃষ্টি প্রতিদিনই চলে এই প্রচারবিমুখ পরিষেবা। মানুষ প্রসাদ হিসেবে পান- ভাত, ডাল, ভাজা, সব্জি,আচার/চাটনি, পাঁপর, মিষ্টি এবং দই। ভরপেট খাবার সকাল থেকে বিকেল অবধি।

Archive

Most Popular