16th Jan 2025
প্রতিবেদন
নিজস্ব প্রতিনিধি
১৪৪ বছর পর প্রয়াগরাজ সঙ্গমে চলছে মহাকুম্ভ মহোৎসব। আর কুম্ভমেলা মানেই নাগা সন্ন্যাসীদের ভিড়। কনকনে ঠান্ডায় তাঁদের গায়ে একটুকরো কাপড়ের ও দেখা মেলে না। গা-ভর্তি ছাইভস্ম মাখা মানুষগুলি যেন সবসময় ই নির্বিকার। সঙ্গত কারণেই এই নাগা সন্ন্যাসীদের নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। কঠিন পরীক্ষা ও অধ্যাবসায় এর মধ্য দিয়ে নাগা সন্ন্যাসী হতে হয়। কাম ক্রোধ লোভ মায়া সবকিছু ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করে তবেই তিনি হয়ে ওঠেন নাগা সন্ন্যাসী। এমনকী এইসব সাধুদের লিঙ্গ পর্যন্ত অকেজো করে দেওয়া হয়। মূলত যে ব্যক্তির বৈরাগ্য লাভের ইচ্ছে প্রবল, তিনি যে জাতি, ধর্ম বা বর্ণেরই হন না কেন, তিনি নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার যোগ্য।
তাঁরা সারা গায়ে মেখে রাখেন ভস্মের ছাই। কী থাকে এতে?
যজ্ঞের ভস্মে গোবর, কলাপাতা, বেলপাতা, কলা, ঘি, কাঁচা দুধ মিশিয়ে তৈরি হয় ওই বিশেষ মিশ্রণ। যা গায়ে মাখলে মশা বা বিষাক্ত সাপ ধারে কাছে ঘেঁষে না।
নাগা সাধুদের ১৭ শৃঙ্গার:
কটি কাপড়, চন্দন, পাদপীঠ (রূপা বা লোহার), পঞ্চকেশ, আংটি, ফুলের মালা (কোমরে বাঁধতে হবে), হাতে চিমটা, কপালে কুমকুম বা রোলির পেস্ট, ডমরু, কমন্ডল, বিনুনি দিয়ে জটানো চুল, তিলক, কাজল, হাতের ব্রেসলেট, বিভূতির লেপ, রুদ্রাক্ষ।
তবে শুধু মাত্র পুরুষ নয়, নারীরাও নাগা সন্ন্যাসী হতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু পৃথক নিয়ম। তাকে প্রতিজ্ঞা করতে হয় যে তিনি কেবলমাত্র ঈশ্বরেই সম্পূর্ণতা সমর্পিত এবং পার্থিব বাসনা কামনায় তাঁর বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। নিজের ও পরিবারের সকলের পিণ্ড তাঁকে জীবিত অবস্থাতেই দিতে হয়। এছাড়াও কপালে থাকে এক বিশেষ টিকা। এবং পুরুষের মতো মহিলা নাগা সন্ন্যাসিনী রা সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় থাকেন না। শরীরে সেলাইবিহীন একটুকরো হলুদ রঙের কাপড় জড়িয়ে রাখতে হয় তাঁদের।
হিন্দুধর্মকে রক্ষা করার জন্য আদিগুরু শঙ্করাচার্য একসময় সাধুদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন। তাঁর নেতৃত্বে এই নাগা সন্ন্যাসীরা কঠোর তপস্যার মধ্য দিয়ে ক্ষিপ্র হয়ে উঠতে থাকেন এবং ধর্মকে রক্ষার জন্য অস্ত্রশিক্ষাও নেন। তাদের যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে নাগা সাধুদের কুম্ভমেলায় স্নানের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।