30th Jan 2025
প্রতিবেদন
এলিজা
শীতকাল, শীতকালীন ছুটি, বিয়ের মরসুম। বাড়িতে মানুষজনের আসা যাওয়া লেগেই থাকে, আর থাকে ফ্যামিলি বা বন্ধুদের নিয়ে গেট টুগেদার। এই সময়ে ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন এনে বাড়ি খানা কি করে নতুন সাজে সাজানো যায় অথবা হঠাৎই বাড়িতে কোন গেট টুগেদার প্ল্যান হলে টুকটাক কিছু পরিবর্তন করে বাড়িকে কিভাবে অন্যরকম আকর্ষণীয় করে তোলা যায় সেই নিয়ে আলোচনা রইলো।
আগের থেকে যদি জানা থাকে এই মরসূমে শহরে বিয়ে বাড়ি এটেন্ড করতে আসা আত্মীয়-স্বজনরা আপনার বাড়িতে উপস্থিত হতে পারেন, কিংবা আপনার যদি এন আর আই আত্মীয় বা বন্ধু-বান্ধব থাকে কিম্বা গেট টুগেদার এর প্ল্যান থাকে, তাহলে অবশ্যই শীতকাল পড়তে পড়তে বাড়ির অন্দর শয্যায় পরিবর্তন নিয়ে আসা যায় , তবে এর মানে দেয়ালের রং থেকে ফার্নিচার সমস্ত আমূল বদলে ফেলা নয়। ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন করেই ঘরটাকে সাজিয়ে নেওয়া।
যে যে ভাবে এই পরিবর্তন করা যেতে পারে , যেমন পুজোর সময় যেরকম ধরনের ওয়েদার থাকে তাতে আমরা একটু ফেস্টিভ লুকের হালকা বা পাতলা পর্দার ব্যবহার করি, শীত এর শুরুতেই এই পর্দাগুলো বদলে উজ্জ্বল রঙের একটু মিক্স ম্যাচ জাতীয় ভারী পর্দা ব্যবহার করা যেতে পারে, আবার শীতকাল বলে আমরা পর্দায় দু তিন রকম লেয়ার ব্যবহার করতে পারি মানে একটাই পর্দায় সামনের দিকে প্রিন্ট আর পিছনের দিকে পাতলা একরঙা কাপড় যেমন পর্দাটাকে মোটা করবে তেমন পর্দার ফল টাও দেখতে ভালো লাগবে। আবার একই পর্দায় যদি ভারী মেটেরিয়াল এবং লেস জাতীয় মেটেরিয়াল এর ব্যবহার করা যায় অর্থাৎ কিনা একটি লেয়ার ভারী মেটারিয়াল এর উপর প্রিন্ট বা এমব্রয়ডারি আর তার ওপরের লেয়ারটি লেসের কাজ করা।
ট্রান্সপারেন্ট বা ট্রান্সলুসেন্ট যদি হয়, তাহলে যেকোনো একটি লেয়ার কে কার্টেন টাই দিয়ে বেঁধে রাখলে দুটি লেয়ার ই খুব সুন্দর দেখাবে আবার দুটো লেয়ারই খোলা থাকলেও ঘরটা দেখতে যেমন সুন্দর লাগবে তেমনি ঘরের উষ্ণতা কিঞ্চিত বাড়িয়ে দেবে।। শীতের সময় একটু মোটা, উজ্জ্বল রঙের এবং আরামদায়ক সোফার কাভার ইত্যাদির ব্যবহার করা যেতে পারে, এছাড়া ব্যবহার করা যেতে পারে অনেক গুলো থ্রো পিলো, একই সঙ্গে বাড়ির মেঝেতে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় কার্পেট, দুরি, রাগ এবং সোফাতেও বিভিন্ন ধরনের থ্রোজ বা রাগ্স ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এগুলো অনায়াসে শীতকালীন মেলা কিংবা এক্সিবিশনে পাওয়া যাবে অথবা খুব সহজেই নিজে হাতেও বানিয়ে নেওয়া সম্ভব।
এতে বাড়ি এসে অতিথিরা যেমন চমকে যাবেন তেমনি প্রশংসাও পাওয়া যাবে অনেক। ঘরের কোনো কোণা একেবারে অন্যরকম করে সাজিয়ে দেওয়ার এবং উষ্ণতার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে আলোর। সুগন্ধি মোমবাতি যেমন ঘরের কোণাকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে ঘরের পরিবেশটাই বদলে দিতে পারে, ঠিক তেমনি পুরনো কাঁচের জলের বোতল বা অন্য কোনো বোতলে ফেয়ারি লাইট রাখলেও গৃহসজ্জা অন্য মাত্রা পাবে, এছাড়াও ঘরের কোণের কোন খালি দেওয়াল সাজানো যেতে পারে ফেয়ারী লাইট দিয়ে।
হাতে সময় থাকলে খুব সহজেই হাতের কাছে পাওয়া যায় এমন ছোটখাটো জিনিস যেমন কমলা লেবুর খোসা, ছোট কাপড়ের টুকরো, দারচিনির রোল ,লবঙ্গ ইত্যাদি দিয়ে ঘর সাজানোর টুকিটাকি তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে। বেড লিনেনেও পরিবর্তন করা যায় এভাবে।এই সময়ে এধরনের ঘরের সাজ এর সঙ্গে অবশ্যই জুড়ে দেওয়া যায় রঙিন ফুল অথবা শুকনো পাতার ডেকোরেশন। বাড়িতে ছোটরা থাকলে অবশ্যই ক্রিসমাস থিম এ সাজানো যায় বাড়ি, তাতে ফেয়ারি লাইট, স্টারস ,ক্রিসমাস ফ্ল্যাগ, ক্রিসমাস ট্রি, আর্টিফিশিয়াল স্নো, বেলুন এবং ক্রিসমাসের গিফট সক্স দিয়েও সাজানো যায় ।
হাতে যদি সময় একদম কম থাকে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই কম জিনিসের পরিবর্তন করে ঘর আকর্ষণীয় করে নিতে হবে, পর্দা বা সোফার কাভার এর মতো বড় জিনিষ বদলাতে না পারা গেলেও, থ্রো, রাগ বা ছোটো কার্পেট ব্যবহার করা যেতে পারে, ফুলদানিতে শুকনো পাতা কিম্বা তাজা ফুল রাখা যেতে পারে, কমলা লেবুর খোসা এ ভেজিটেবল ওয়েল দিয়ে নিমেষে তৈরি করা যেতে পারে সুগন্ধি মোমবাতির বিকল্প, শুকনো ফুল পাতা কিম্বা ফ্রেশ ফুল পাতা দিয়ে গারল্যান্ড তৈরি করে সদর দরজা সাজানো যায়, শীতের হোম মেকওভারের চটজলদি আরেকটা উপায় হল ল্যাম্পশেড আর বাল্ব পাল্টানো, সাধারণ বাল্ব বদলে ইনক্যান্ডিসেন্ট বাল্ব লাগানো।এগুলো শুধু ওয়ার্ম আলো দেয় না, সত্যি সত্যি ঘর গরম করে তোলে। কমলা লেবুর খোসা আর দারচিনি দিয়ে বানানো যায় নানান ধরনের সাজানোর জিনিস।কিম্বা মোমবাতির চার পাশ। এভাবে ঘর সাজালে শীতের আমেজ অনুভব হবে ঘরের মধ্যেই।