14th Mar 2025

Highlights :

www.rojkarananya.com news

গঙ্গার জল পচে না কেন?

3rd Mar 2025

প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিনিধি


গঙ্গার জল পচে না—এটি বহু প্রাচীনকাল থেকে বিশ্বাস করা হয়ে আসছে, এবং এর পেছনে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে।

1. অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য:

গঙ্গার জলে এমন কিছু ব্যাকটেরিওফাজ (Bacteriophage) ভাইরাস পাওয়া গেছে, যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে পারে। এই ব্যাকটেরিওফাজ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে, ফলে জল দীর্ঘদিন পচে না।

2. দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ বেশি:

সাধারণ নদীর পানির তুলনায় গঙ্গার জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের (Dissolved Oxygen) মাত্রা বেশি থাকে, যা জলকে বিশুদ্ধ রাখে ও দুর্গন্ধমুক্ত করে। অক্সিজেন বেশি থাকার কারণে, এটি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করলেও এতে সহজে পচন ধরা বা দূষিত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

3. ভূতাত্ত্বিক ও খনিজ উপাদান

গঙ্গা নদীর উৎস হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ। হিমালয়ের গলিত বরফের সঙ্গে বিভিন্ন খনিজ (minerals) মিশে থাকে, যা গঙ্গার জলকে দীর্ঘদিন বিশুদ্ধ রাখে। বিশেষ করে, সিলিকা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে।

4. গতি ও প্রবাহ:

গঙ্গার জল সাধারণত খুব দ্রুত প্রবাহিত হয়, যার ফলে এতে স্থির জলাশয়ের মতো শৈবাল বা ব্যাকটেরিয়ার জন্ম কম হয়।

প্রাচীনকাল থেকে বিশ্বাস ও গবেষণা:

ব্রিটিশ বিজ্ঞানী সি.ই. নেলসন গঙ্গার জল নিয়ে গবেষণা করে দেখেছিলেন যে এটি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার পরেও পচে না। ১৯৫৬ সালে ডঃ হেন্ড্রি স্কিভান নামে এক গবেষক দেখান যে গঙ্গার জল বহু বছর ধরে সংরক্ষণ করলেও এতে কোনো পচনধারার লক্ষণ দেখা যায় না। ভারতের ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (NEERI)-এর গবেষণায়ও গঙ্গার জলে ব্যাকটেরিওফাজের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

গঙ্গার জল পচে না কারণ এতে বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিওফাজ, উচ্চ অক্সিজেনের পরিমাণ, প্রাকৃতিক খনিজ, এবং দ্রুত প্রবাহ আছে। তবে বর্তমানে গঙ্গার দূষণের কারণে এর প্রাকৃতিক বিশুদ্ধতার গুণ কিছুটা কমে যাচ্ছে।

Archive

Most Popular