19th Jul 2024
স্বাস্থ্য
নিজস্ব প্রতিনিধি
জানেন কি কিছু খাবার গরম করে খেলে আপনার শরীরের নানা ক্ষতি হতে পারে। হতে পারে মৃত্যু পর্যন্ত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের লাইফ স্টাইলের পরিবর্তন ঘটে। কখনও তা ইচ্ছে অনুযায়ী, কখনও বা কাজের তাগিদে। নিউক্লিয়ার ফ্যমিলি। কর্তা-গিন্নি দুজনেই ব্যস্ত চাকরি জীবনে। একটি সন্তান বা দুটি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বোর্ডিং বা রক্ষকের কাছেই থাকে। মডিউলার কিচেন ঝকঝকে তকতকে। কারণ সেখানে প্রায় প্রতিদিন প্রয়োজনীয় রান্নার জন্য যে ব্যবহার দরকার তা হয়ে ওঠে না। একটা বড় করে রান্না করে সেটা সপ্তাহ ভর খাওয়া, এটা শহুরে নাগরিক সংস্কৃতির রীতি প্রায়।
তাই সেই খাবার বার বার গরম করে খেতে হয়। আবার গরম খাবার অনেকেরই পছন্দ। রোজকার জীবনে সময় বাঁচানোর জন্য রান্না করে ফ্রিজে রেখে দেওয়া পরে সেই খাবার গরম করে খাওয়া- এটা কতটা উপকার, কতটা নয়, আমরা অনেকেই জানি না। যেমন ফ্রিজে রাখা যেকোনও খাবার পরের দিন খেলে ফ্রিজ থেকে একবারে বের করতে নেই। যতটুকু খাবেন, ঠিক ততটুকুই বের করবেন। তবে কি জানেন, কিছু খাওয়ার বারবার গরম করে খেলে আসতে পারে ঘোর বিপদ? এতে যেমন কমে পুষ্টিগুণ তেমন বেড়ে যায় রোগের ঝুঁকি।
চিকিৎসকেরা বলছেন, সবসময় টাটকা খাবার খাওয়াই উচিৎ! তাও একান্তই যদি ভাত গরম করে খেতে হয়, সর্বোচ্চ একবার গরম করাই ভালো। এর বেশি গরম করলে, ভাত নষ্ট হয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তেমনি আজ আপনাদের কাছে এমন কিছু খাবারের কথা বলব, যেগুলো কখনও কোনওদিন গরম করে খাবেন না।
ভাত
ভাত রান্না করার সময় তাতে বেসিলস সিরিয়াস ব্যাক্টেরিয়া তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সুষম খাবারের অঙ্গ হিসেবে অল্প করে ভাত খেলে, সে আপনি যদি ফ্যানযুক্ত ভাতও খান, ওজন বাড়ে না, বরং উচ্চ রক্তচাপ, মেটাবলিক সিনড্রোম (হৃদরোগের অন্যতম কারণ) ও কোমরের মাপ বাড়ার আশঙ্কা কমে যথাক্রমে ৩৪, ২১ ও ২৭ শতাংশ। কমে কিছু ক্যানসারের আশঙ্কাও। কাজেই সারা দিনে ১৫০ গ্রামের মতো ভাত খেতেই পারেন। এতে ৫০০ ক্যালোরির বেশি ঢোকে না শরীরে। ভাতের ভক্ত হলে, রুটি খেয়ে অতৃপ্ত থাকার বা পেটের গোলমালে ভোগার দরকার নেই। দিনে একবার কি দু-বার ভাতই খান।' কিন্তু রান্না করা ভাত ফের গরম করলে এই ব্যাক্টেরিয়া সংখ্যায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়ে ডায়েরিয়া পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ব্যাকটেরিয়া চাল সেদ্ধ করে ভাত তৈরি হয়ে যাওয়ার পরও বেঁচে থাকে। ভাত ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে দিলে - এই ব্যাকটিরিয়ার বংশ বিস্তার করে! শুরু হয় বিষক্রিয়া।
আবার ভাত ৫ থেকে ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়ফের গরম করা হলে এই ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় হয়ে ওঠে। ভাঙে রয়েছে স্টার্চ, শরীরকে শক্তি জোগাতে যার বিরাট ভূমিকা। আছে ফাইবার, পেটের সমস্যা কমাতে, ওজন-সুগার-রক্তচাপ বশে রাখতে যার ভূমিকা আছে। ভাত সহজে হজম হয়। ফলে জ্বর, পেটের গোলমাল বা অন্য অসুখ-বিসুখের মধ্যেও খেতে পারেন। ডায়াবেটিসেও সে ব্রাত্য নয়। ফাইবারসমৃদ্ধ শাক-সবজি-স্যালাড, ডাল, মাছ ইত্যাদি থাকলে এক-আধ কাপ ভাত খাওয়া যেতে পারে। ভাত খেলে সেরেটোনিন নামে হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে বলে অল্প খেলেও শরীর-মন তৃপ্ত থাকে। ভুলভাল খাবারের প্রতি আকাঙ্খা কম জাগে। ভাতে রয়েছে প্রোটিন ও বিভিন্ন ভিটামিন- মিনারেল। এত উপকার পেতে গেলে ভাত রান্না করতে হয় সঠিকভাবে। এবং খেতেও হবে সঠিকভাবেই।
ডিম
ডিম যদি দ্বিতীয়বার গরম করা হয় তাহলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। চীনে প্রায় ৫ লাখ লোকের ওপর এক গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিদিন একটা করে ডিম খেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিম থেকে শারীরিক উপকার পেতে হলে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করতে হবে। ইংল্যান্ডে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিটা ফরুহি জানাচ্ছেন, পুষ্টি সংক্রান্ত নানা গবেষণায় অনেক সময়ই কিছু না কিছু ফাঁক থেকে যায়, কিন্তু চীনে বড় এই সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে চালানো গবেষণা থেকে অন্তত একটা বিষয় পরিস্কার যে প্রতিদিন একটা ডিম খেলে তার থেকে হৃদযন্ত্র বা শরীরের রক্ত সঞ্চালনে কোন ঝুঁকি তৈরি হয়না। বরং প্রতিদিন একটা ডিম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। বলছেন বিজ্ঞানীরাও। ডিমে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, ভিটামিন এ, ডি, বি এবং বি-টুয়েলভ। এছাড়াও ডিমে আছে লুটেইন ও যিয়াস্যানথিন নাম দুটি প্রয়োজনীয় উপাদান যা বৃদ্ধ বয়সে চোখের ক্ষতি ঠেকাতে সাহায্য করে।
ব্রিটিশ ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েশনের ডঃ ফ্রলাঙ্কি ফিলিপস বলছেন, 'দিনে একটা এমনকি দুটো ডিমও স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।' তবে একটা কথা বিশেষভাবে বলা প্রয়োজন, নিয়ম মেনে ডিম খেতে হবে। যেদিন যে ডিম খাবেন, সেদিন তার রান্না করা আবশ্যক। একেবারে করে রাখা রান্না করা ডিম পরের দিন গরম করলে ডিমের মধ্যে নানা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মে। এসব ব্যাকটেরিয়া পেটের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এছাড়া ডিম দ্বিতীয়বার গরম করলে এরমধ্যে থাকা নাইট্রোজেন অক্সিডাইজড হয় যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। ডিমের সব রকমের উপকারিতাও নষ্ট হয়। একারণে পুষ্টিবিদদের মতে, ডিম রান্না কিংবা ভাজা যেভাবেই খান না কেন, কোনোটাই দ্বিতীয়বার গরম করে খাওয়া ঠিক নয়।
মুরগির মাংস
আমাদের মধ্যে অনেকেই সময় বাঁচানোর জন্য একবারেই অনেক মুরগির মাংস রান্না করে রাখি। কিন্তু মুরগির মাংস বারবার গরম করে খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। খাসির মাংসের থেকে সস্তা মাংস ত্বক ও শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর উপাদানে ভরপুর। মুরগির মাংস ওজন কমাতে সাহায্য করে, হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। পাশাপাশি এতে রয়েছে আরও নানা রকম পুষ্টিগুণ। মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। যা পেশীকে শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখে। কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন হওয়ায় এটি ওজন কমানোর ভালো উৎস। পেট ভরা রেখেও দীর্ঘদিন ওজন কমিয়ে রাখতে চাইলে মুরগির মাংস নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্যকর খাবার। মুরগির মাংসে উচ্চ মাত্রায় ট্রাইফটোফ্যান নামে অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। ফলে এক বাটি চিকেন স্যুপ স্বস্তি এনে দিতে পারে। বিষন্নবোধ হলে কয়েকটি চিকেন উইংস খাওয়া যেতে পারে। যা মস্তিষ্কে সেরেটোনিনের মাত্রা বাড়িয়ে চাপমুক্ত থাকতে সাহায্য করে। হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। বয়স্কদের আর্থ্রাইটিস ও হাড় সংক্রান্ত অন্য রোগের আশঙ্কা বেশি থাকে। কিন্তু ভয়ের কিছু নেই। প্রতিদিন মুরগির মাংস খাবার তালিকায় রাখলে এর প্রোটিন হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করবে। হার্টের জন্য ভালো। মুরগির মাংস হোমোকিস্টাইনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্টের বিভিন্ন ধরনের কার্ডিওভাস্কুলার রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। হোমোকিস্টাইন একটি অ্যামিনো অ্যাসিড। উচ্চমাত্রায় এটি হার্টের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
মুরগির মাংস ফসফরাস সমৃদ্ধ হওয়ায় দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়া ফসফরাস কিডনি, লিভার ও স্নায়ুতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। হজমে সাহায্য করে। মুরগির মাংসের ভিটামিন ও শরীরে বিপাকের মাত্রা উন্নত করে। শরীরে চবি না বাড়িয়েই খাবার হজম করতে পারে। রক্তনালী ঠিক রাখতেও এটি কাজ করে। শরীরকে ক্যান্সারমুক্ত রাখতে নিয়াসিন একটি প্রয়োজনীয় ভিটামিন। মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে নিয়াসিন থাকে, যা বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার ও ত্রুটিপূর্ণ ডিএনএ দ্বারা যেসব জিনগত সমস্যা তৈরি হয় তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। চোখ ভালো রাখে। অন্য খাবারগুলোর মতো মুরগির মাংসও চোখের সুরক্ষায় কাজ করে। মুরগির মাংসে রেটিনাল, আলফা ও বিটা ক্যারোটিন, লাইকোপেন থাকে, যার সবগুলোই ভিটামিন 'এ' তে পাওয়া যায়। চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এগুলো জরুরি উপাদান। কারণ মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। রান্নার পরে ফের তা গরম করলে প্রোটিনের কম্পোজিশন বদলে গিয়ে তা থেকে বদহজম হতে পারে। সঙ্গে মুরগির এই পুষ্টি গুন নষ্ট হয়ে যায়। ফলে শরীর খারাপ হতে পারে। এমনকি বাড়াবাড়িতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
চা
এটা আমাদের অনেকেরই জানা যে একবার চা বানানোর পর তা ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পুনরায় গরম করা উচিত নয়। কারণ চায়ের মধ্যে ট্যানিক অ্যাসিড থাকে। স্বাস্থ্য রক্ষায় চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিগুণ সামান্য হলেও এতে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যেমন পলিফেনলস, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং ক্যাটেচিন। পলিফেনলস এবং ক্যাটেচিন ফ্রি রেডিক্যালস তৈরিতে বাধা দেয় এবং কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। একারণে চা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চায়ে উপস্থিত পলিফেনলসের পরিমাণ ২৫% এরও বেশি যা দেহের অভ্যন্তরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। চায়ে ৭% থিওফাইলিন ও থিওব্রোমিন রয়েছে যা শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির জন্য অনেক উপকারী।
চা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হলেও এতে রয়েছে ক্যাফেইন নামক উত্তেজক পদার্থ। সাধারণত এক কাপ চায়ে রয়েছে (৩০-৪০) মিলিগ্রাম ক্যাফেইন। বস্তুত ক্যাফেইনের কারনেই ঘুম কম হওয়া, হজমে ব্যঘাত ঘটা ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তবে এই ক্যাফেইনের কিছু ভালো দিকও রয়েছে। এটি হৃদপিণ্ড ও দেহের অন্যান্য পেশি সতেজ রাখতে সহায়তা করে। যেহেতু চা আমাদের প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনের নিত্যসঙ্গী, সেহেতু এই চা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং কিছু ক্ষেত্রে তা ক্ষতিও করে। তৈরি করা চা ফের গরম করে খেলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে।
আলুর তরকারি
পুষ্টিগুণে ভরপুর এই খাদ্যটি যদি বারেবারে গরম করে খাওয়া হয়, তাহলে এতে উপস্থিত শরীরের উপকারী উপাদানগুলির কর্মক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। আমাদের খাদ্য তালিকায় আলু যেন প্রতিদিনের সঙ্গী। আলু ছাড়া মনে হয় কোনও তরকারি রান্ন হয় না। অধিকাংশ তরকারি রান্নাতে আলু ব্যবহার হয়। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আলু একটি খুব সাধারণ ও প্রয়োজনীয় সবজি। আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ফাইবার, ও ভিটামিন যা আমাদের শরীরকে সুস্বাস্থ্য দেয় ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তবে অনেকেই কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাওয়ার জন্য আলু খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে আলু খাওয়ার নানারকম উপকারিতা রয়েছে। ফলে নিয়মিত কম পরিমাণে আলু খেলে আপনি বিভিন্ন ধরণের উপকার পাবেন। আলুতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রনও ক্যালসিয়াম, এই সবকটি উপাদান হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারি। শরীরের গঠনে আলু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া আলুতে রয়েছে ফসফরাস যা অস্টিওপরোসিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যে কম সোডিয়ামযুক্ত খাবার আমাদের খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এর সঙ্গে প্রয়োজন বেশি পরিমাণে পটাসিয়াম গ্রহন করা। এই দুটি জিনিসই সঠিক পরিমাণে আছে আলুতে যা রক্তচাপ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করে।
আলুতে আছে পর্যাপ্ত পটাসিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি ৬। আর এই ভিটামিন জন্য কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ হলে আমাদের হার্টও সুস্থ থাকে। আলুতে আছে ফোলেট যা ডি.এন.এ. তৈরি ও মেরামত করতে সাহায্য করে থাকে। ফলে যেসব কোষগুলি ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, সেগুলি নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া আলুতে থাকা ফাইবার কোলন ক্যান্সার মুক্ত করতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরে সঠিক পরিমাণে ফাইবার প্রবেশ করলে হজম করার ক্ষমতা বাড়ে ও পাচনতন্ত্র সঠিককভাবে চলতে থাকে। আলুতে বিদ্যমান ভিটামিন সি দাঁত ও মাড়ির সমস্যার ক্ষেত্রে বেশ উপকারি। এছাড়া এক টুকরো আলু দিয়ে রোজ দাঁত পরিষ্কার করলে দাঁতের নানা সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। পেটের নানারকম সমস্যা যেমন ডায়রিয়া, ডিসেন্ট্রি বা হজম সমস্যা দেখা গেলে আলু সেদ্ধ করে খেলে খানিকটা উপকার পাওয়া যায়। আলুতে যে পরিমাণ ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে তা শরীরের ইলেক্ট্রোলাইসিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। আমাদের হাত, পা বা শরীরের কোনও অংশ ফুলে যাওয়া থেকে অনায়াসে মুক্তি পাওয়া যায়। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্যে কার্বোহাইড্রেট, পটাসিয়াম ও গ্লুকোজ খুব জরুরি। এই উপাদান গুলো একসঙ্গে আলুতে থাকার ফলে মস্তিষ্ক স্বাস্থ্যকর রাখতেও সাহায্য করে। ওজন সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় অল্প পরিমাণ আলু রাখা উচিত। আলুতে অতি কম পরিমাণে ফ্যাট থাকে যার ফলে পেট ভরা সত্ত্বেও ওজন বেশি বৃদ্ধি পায়না। আলুতে থাকা ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, মিনারেল ও পটাসিয়াম কোলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণ রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এর ফলে আমদের হার্ট সুস্থ থাকে। আমরা যদি এই আলুর তরকারি আবার বা বারবার গরম করে খাই তাহলে শরীরের কোনও উপকারেই লাগে না। শুধু তাই নয়, একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে বারবার গরম করে আলু দিয়ে বানানো কোনও তরকারি খেলে পেট খারাপ হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ফুড পয়জনিং হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।