10th Aug 2024
প্রতিবেদন
সুস্মিতা মিত্র
অসম সীমানা ঘেঁষা পশ্চিমবঙ্গের একেবারে উত্তর পূর্ব প্রান্তের এই জেলার আনাচে কানাচে ঘন জঙ্গল, বন্যপ্রাণ, কাঠ, চা আর চোখজুড়ানো নৈসর্গিক সৌন্দর্য। বস্তুত ডুয়ার্স এলাকার সিংহভাগ নিয়েই আলিপুরদুয়ার। ভৌগোলিকভাবে আলিপুরদুয়ার পশ্চিমে জলপাইগুড়ি, পূর্বে আসাম এবং দক্ষিণে কোচবিহারের সীমানায় অবস্থিত একটি স্থলবেষ্টিত জেলা। উত্তরে জেলাটি ভুটানের সাথে একটি আন্তর্জাতিক সীমান্ত রেখা ভাগ করেছে। ভূমির ভূসংস্থান নদী, স্রোত এবং পাহাড় দ্বারা কাটা এবং চা বাগান এবং বন দ্বারা আচ্ছাদিত। জেলা জুড়ে প্রবাহিত প্রধান নদীগুলি হল তোর্সা, রায়ডাক, কালজানি, সংকোশ এবং গদাধর।
আলিপুরদুয়ার জেলার সদর শহর এর নাম কি?
এই জেলায় ৬৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৯টি সেন্সাস টাউন আছে। জেলার সদর আলিপুরদুয়ার। আলিপুরদুয়ার জেলার থানাগুলি হল আলিপুরদুয়ার, শামুকতলা, কুমারগ্রাম, ফালাকাটা, কালচিনি, জয়গাঁ, মাদারিহাট ও বীরপাড়া। এই জেলায় ভারতের দুটি জাতীয় উদ্যান অবস্থিত।
রাজ্য সরকারের হেরিটেজ কমিশনের সাইট বলে দিচ্ছে, আলিপুরদুয়ার বা ইংরেজিতে Alipurduar নামটির তিনটি অংশ রয়েছে। 'Ali', 'Pur' ও 'Duar'। এর মধ্যে 'Pur' বা'পুর' কথাটির অর্থ বাসস্থান, আর দুয়ার শব্দটি এসেছে Dooars থেকে। কিন্তু 'আলি'? এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আর এক ইতিহাস। ছোট করে বললে ভুটান যুদ্ধে কর্নেল হেদায়েত আলি খানের অবদানকে শ্রদ্ধা জানাতেই তাঁর নাম থেকে 'Ali' অংশটি নেওয়া।
আলিপুরদুয়ারের পুরাতন নাম কি?
আসল নাম ছিল আলিপুর যার অর্থ আলি যেখানে থাকতেন সেই জায়গাটিকে কলকাতার আলিপুর থেকে আলাদা করার জন্য দুয়ার যোগ করা হয়েছিল।
অর্থনীতি:
চা বাগান এখানকার অর্থনীতির বড় মেরুদণ্ড। তা ছাড়া রয়েছে পর্যটন। পাহাড় থেকে জঙ্গল, পর্যটনপ্রেমী মানুষদের জন্য সব সাজিয়ে রেখেছে আলিপুরদুয়ার। তা ছাড়া জলদাপাড়া ওয়াইল্ডলাইফ স্যানচুয়ারি, বক্সা টাইগার রিজার্ভ ও উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেলের ডিভিশনাল হেড কোয়ার্টারও এখানেই।
আলিপুরদুয়ার জেলার বিখ্যাত দুটি রান্না আজ আপনাদের জন্য।
পনিরের লাল ঝোল
আদিবাসী মহল্লার জনপ্রিয় খাবার পনিরের লাল ঝোল। পেঁয়াজের ব্যবহার প্রচুর হয় এই পদটিতে। এছাড়াও লাল পাকা লঙ্কা ও টোম্যাটো ব্যবহার হয় ঝোলটির রং গাঢ় লাল করতে।
কী কী লাগবে
৪০০ গ্রাম পনির, ১ কাপ টমেটো আদা রসুন ও পেঁয়াজ বাটা, ১ চা চামচ লাল লঙ্কা বাটা, ১/২ চা চামচ কাশ্মীরী লঙ্কার গুঁড়ো,
১/৪ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো,
১/২ চা চামচ জিরা গুঁড়ো,
১ চা চামচ ধনে গুঁড়ো, স্বাদ মত নুন ও চিনি, পরিমাণ মত তেল ও দুধ
কীভাবে বানাবেন
পনির টুকরো টুকরো করে কেটে উষ্ণ গরম দুধের মধ্যে চিনি দিয়ে মিশিয়ে ভিজিয়ে রাখুন। প্যানে তেল গরম করে তাতে জিরা, তেজপাতা দিয়ে সমস্ত বাটা মশলা কষিয়ে নিন। নুন, হলুদ গুঁড়ো ও কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। মশলা ভাজা হয়ে গেলে পনিরের টুকরো দিয়ে ভাল করে ভেজে দুধ দিয়ে দিন। ফুটে উঠলে চিনি ও গরম মসলা গুঁড়ো দিয়ে নামিয়ে নিন।
টিকলি রুটি
দোলের পর এই পদটি জনপ্রিয় আদিবাসী মহল্লার মেচ জনজাতির মধ্যে। পোয়া রুটি ও টিকলি রুটি তৈরি হয় অতিথি অভ্যাগত সকলের খাওয়ার জন্য। টিকলি রুটির অপর নাম মাইব্রা রুটি।
কী কী লাগবে
আতপ চালের গুঁড়ো, নুন, চিনি, উষ্ণ গরম জল
কীভাবে বানাবেন
চালের গুঁড়ো ছেঁকে নিয়ে তাতে চিনি, নুন মিশিয়ে নিন। অল্প অল্প করে উষ্ণ গরম জল দিয়ে মেখে নিন। লেচি কেটে বেলে সেঁকে নিলেই তৈরী টিকলি রুটি।