1st Oct 2024
বাড়িঘর
নিজস্ব প্রতিনিধি
রজত জয়ন্তী বর্ষে সোনারপুর রিক্রিয়েশন ক্লাবের এবারের ভাবনা লোক শিল্প ও আন্তরিক শপথ।
সমগ্র বিশ্ব জুড়ে শিল্প বিপ্লবের আগে ক্ষুদ্র কুটির শিল্প বা লোকশিল্প ই ছিল শিল্পের প্রধান উৎস। আমাদের দেশ তথা রাজ্যেও বহমান নদীর ধারার মতো বয়ে আসছে লোক শিল্পের সংস্কৃতি। বংশ পরম্পরায় সেই প্রাচীন যুগ থেকে এক একটি অঞ্চল,তথা এক একটি গ্রাম কোথাও বা এক একটি পরিবার প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে একই লোকশিল্পকে ধারন ও বহন করে চলেছে। উদাহরণ স্বরূপ নদীয়ার কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্প যা নানান রকমের মাটির পুতুল, আবার কলকাতার কুমারটুলির মাটির প্রতিমা বিশ্ব বিখ্যাত; শরৎ আসার আগে থেকেই কুমারটুলিতে প্রতিমা গড়ার ধুম পড়ে যায়, শুধু তিলোত্তমা কিংবা ভারত নয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কুমার টুলির দুর্গা প্রতিমা পূজিত হয়।
তেমনি পটে আঁকা ছবিও অন্যতম ঐতিহ্যপূর্ণ লোকশিল্প। নানাধরনের প্রাকৃতিক রং ব্যাবহার করে কখনো পৌরাণিক, কখনো সামাজিক নানা কাহিনীকে ফুটিয়ে তুলেন এই পট শিল্পিরা, যা সমসাময়িক সমাজের অন্যতম প্রামাণ্য তথ্যস্বরূপ। এছাড়াও বলা যায় মেদিনীপুরের বিখ্যাত মাদুর শিল্প, দাঁতানের কামারদের রকমারি লোহার কারিগরি অন্যতম, যা আজও প্রচুর মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহের আধার স্বরূপ।
তবে শিল্প বিপ্লবের পরে আধুনিক যন্ত্রপাতিতে তৈরি স্বল্পমূল্যের জিনিসপত্রের প্রতি মানুষের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় লোকশিল্প বা কুটির শিল্প মার খায়, ফলস্বরূপ অনেকেই পরিবারিক জীবিকা থেকে সরে গিয়ে অন্যভাবে জীবন নির্বাহ করেন। যদিও বর্তমানে অত্যাধুনিক সমাজব্যবস্থা এবং প্রগতিশীল মানুষদের কাছে নতুন করে সাড়া ফেলেছে হ্যান্ডিক্রাফট বা হস্তশিল্প তথা লোকশিল্প। চাহিদার সাথে সাথে বেড়েছে লোকশিল্পের প্রতি উৎসাহও। সেই প্রেক্ষাপটেই সোনারপুর রিক্রিয়েশন ক্লাবের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। বেঁচে থাক লোক শিল্প, লোক সংস্কৃতি, বেঁচে থাকুক লোক শিল্পিরা। আমরা যেন তাঁদের প্রাপ্য সম্মান দিতে কখনোই ভুলে না যাই।