21st Nov 2024

Highlights :

www.rojkarananya.com news

একবারেই খান। গরম করে নয়...

19th Oct 2024

স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি


সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের লাইফ স্টাইলের পরিবর্তন ঘটে। কখনও তা ইচ্ছে অনুযায়ী, কখনও বা কাজের তাগিদে। নিউক্লিয়ার ফ্যমিলি। কর্তা-গিন্নি দুজনেই ব্যস্ত চাকরি জীবনে।

একটি সন্তান বা দুটি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বোর্ডিং বা রক্ষকের কাছেই থাকে। মডিউলার কিচেন ঝকঝকে তকতকে। কারণ সেখানে প্রায় প্রতিদিন প্রয়োজনীয় রান্নার জন্য যে ব্যবহার দরকার তা হয়ে ওঠে না। একটা বড় করে রান্না করে সেটা সপ্তাহ ভর খাওয়া, এটা শহুরে নাগরিক সংস্কৃতির রীতি প্রায়। তাই সেই খাবার বার বার গরম করে খেতে হয়। আবার গরম খাবার অনেকেরই পছন্দ। রোজকার জীবনে সময় বাঁচানোর জন্য রান্না করে ফ্রিজে রেখে দেওয়া পরে সেই খাবার গরম করে খাওয়া- এটা কতটা উপকার, কতটা নয়, আমরা অনেকেই জানি না। যেমন ফ্রিজে রাখা যেকোনও খাবার পরের দিন খেলে ফ্রিজ থেকে একবারে বের করতে নেই। যতটুকু খাবেন, ঠিক ততটুকুই বের করবেন।

তবে কি জানেন, কিছু খাওয়ার বারবার গরম করে খেলে আসতে পারে ঘোর বিপদ? এতে যেমন কমে পুষ্টিগুণ তেমন বেড়ে যায় রোগের ঝুঁকি। চিকিৎসকেরা বলছেন, সবসময় টাটকা খাবার খাওয়াই উচিৎ! তাও একান্তই যদি ভাত গরম করে খেতে হয়, সর্বোচ্চ একবার গরম করাই ভালো। এর বেশি গরম করলে, ভাত নষ্ট হয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তেমনি আজ আপনাদের কাছে এমন কিছু খাবারের কথা বলব, যেগুলো কখনও কোনওদিন গরম করে খাবেন না।

চা

এটা আমাদের অনেকেরই জানা যে একবার চা বানানোর পর তা ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পুনরায় গরম করা উচিত নয়। কারণ চায়ের মধ্যে ট্যানিক অ্যাসিড থাকে। স্বাস্থ্য রক্ষায় চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিগুণ সামান্য হলেও এতে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যেমন পলিফেনলস, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং ক্যাটেচিন। পলিফেনলস এবং ক্যাটেচিন ফ্রি রেডিক্যালস তৈরিতে বাধা দেয় এবং কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। একারণে চা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চায়ে উপস্থিত পলিফেনলসের পরিমাণ ২৫% এরও বেশি যা দেহের অভ্যন্তরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। চায়ে ৭% থিওফাইলিন ও থিওব্রোমিন রয়েছে যা শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির জন্য অনেক উপকারী। চা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হলেও এতে রয়েছে ক্যাফেইন নামক উত্তেজক পদার্থ। সাধারণত এক কাপ চায়ে রয়েছে (৩০-৪০) মিলিগ্রাম ক্যাফেইন। বস্তুত ক্যাফেইনের কারনেই ঘুম কম হওয়া, হজমে ব্যঘাত ঘটা ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তবে এই ক্যাফেইনের কিছু ভালো দিকও রয়েছে। এটি হৃদপিণ্ড ও দেহের অন্যান্য পেশি সতেজ রাখতে সহায়তা করে। যেহেতু চা আমাদের প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনের নিত্যসঙ্গী, সেহেতু এই চা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং কিছু ক্ষেত্রে তা ক্ষতিও করে। তৈরি করা চা ফের গরম করে খেলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে।

আলুর তরকারি

পুষ্টিগুণে ভরপুর এই খাদ্যটি যদি বারেবারে গরম করে খাওয়া হয়, তাহলে এতে উপস্থিত শরীরের উপকারী উপাদানগুলির কর্মক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। আমাদের খাদ্য তালিকায় আলু যেন প্রতিদিনের সঙ্গী। আলু ছাড়া মনে হয় কোনও তরকারি রান্ন হয় না। অধিকাংশ তরকারি রান্নাতে আলু ব্যবহার হয়। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আলু একটি খুব সাধারণ ও প্রয়োজনীয় সবজি। আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ফাইবার, ও ভিটামিন যা আমাদের শরীরকে আশা করি সুস্বাস্থ্য দেয় ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তবে অনেকেই কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাওয়ার জন্য আলু খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে আলু খাওয়ার নানারকম উপকারিতা রয়েছে। ফলে নিয়মিত কম পরিমাণে আলু খেলে আপনি বিভিন্ন ধরণের উপকার পাবেন। আলুতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রনও ক্যালসিয়াম, এই সবকটি উপাদান হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারি। শরীরের গঠনে আলু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া আলুতে রয়েছে ফসফরাস যা অস্টিওপরোসিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যে কম সোডিয়ামযুক্ত খাবার আমাদের খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এর সঙ্গে প্রয়োজন বেশি পরিমাণে পটাসিয়াম গ্রহন করা। এই দুটি জিনিসই সঠিক পরিমাণে আছে আলুতে যা রক্তচাপ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করে। আলুতে আছে পর্যাপ্ত পটাসিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি ৬। আর এই ভিটামিন জন্য কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ হলে আমাদের হার্টও সুস্থ থাকে। আলুতে আছে ফোলেট যা ডি.এন.এ. তৈরি ও মেরামত করতে সাহায্য করে থাকে। ফলে যেসব কোষগুলি ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, সেগুলি নষ্ট হয়ে যায়।

তাছাড়া আলুতে থাকা ফাইবার কোলন ক্যান্সার মুক্ত করতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরে সঠিক পরিমাণে ফাইবার প্রবেশ করলে হজম করার ক্ষমতা বাড়ে ও পাচনতন্ত্র সঠিককভাবে চলতে থাকে। আলুতে বিদ্যমান ভিটামিন সি দাঁত ও মাড়ির সমস্যার ক্ষেত্রে বেশ উপকারি। এছাড়া এক টুকরো আলু দিয়ে রোজ দাঁত পরিষ্কার করলে দাঁতের নানা সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। পেটের নানারকম সমস্যা যেমন ডায়রিয়া, ডিসেন্ট্রি বা হজম সমস্যা দেখা গেলে আলু সেদ্ধ করে খেলে খানিকটা উপকার পাওয়া যায়। আলুতে যে পরিমাণ ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে তা শরীরের ইলেক্ট্রোলাইসিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। আমাদের হাত, পা বা শরীরের কোনও অংশ ফুলে যাওয়া থেকে অনায়াসে মুক্তি পাওয়া যায়। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্যে কার্বোহাইড্রেট, পটাসিয়াম ও গ্লুকোজ খুব জরুরি। এই উপাদান গুলো একসঙ্গে আলুতে থাকার ফলে মস্তিষ্ক স্বাস্থ্যকর রাখতেও সাহায্য করে। ওজন সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় অল্প পরিমাণ আলু রাখা উচিত। আলুতে অতি কম পরিমাণে ফ্যাট থাকে যার ফলে পেট ভরা সত্ত্বেও ওজন বেশি বৃদ্ধি পায়না। আলুতে থাকা ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, মিনারেল ও পটাসিয়াম কোলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণ রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এর ফলে আমদের হার্ট সুস্থ থাকে। আমরা যদি এই আলুর তরকারি আবার বা বারবার গরম করে খাই তাহলে শরীরের কোনও উপকারেই লাগে না। শুধু তাই নয়, একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে বারবার গরম করে আলু দিয়ে বানানো কোনও তরকারি খেলে পেট খারাপ হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ফুড পয়জনিং হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।

পালংশাক

একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে পালংশাককে গরম করে খেলে শরীরে কার্সিনোজেনিক এলিমেন্ট বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আপনারা জানেন, পালং শাকে রয়েছে মিনারেল, ভিটামিন, ফাইটো নিউট্রিয়েন্টস থেকে শুরু করে পিগমেন্টস। তাই পালংশাককে একরকম সুপার ফুড বলা যায়। ত্বকের সুরক্ষা বিভিন্ন ফাইটোনিউট্রিয়েন্টক্স ও পিগমেন্টের উপস্থিতি ত্বককে ক্ষতিকর ইউভি রশ্মির হাত থেকে সুরক্ষা দেয় এবং ত্বকের ক্যানসারের প্রতিরোধ হিসেবেও কাজ করে। জাপানের গবেষকদের দাবি, পালংশাকের ফ্ল্যাভনয়েড নারীদের শরীরে ওষুধের কাজ করে। নিয়মিত পালংশাক খেলে গর্ভাশয়ে ক্যানসারের আশঙ্কা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়। এ ছাড়া পালংশাকে থাকা ক্যারটিনয়েড, নিওজ্যানথিন প্রস্টেট ক্যানসারের কোষকে মেরে ফেলতে সক্ষম।

পালংশাকে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, যা চোখের ভেতর ও বাইরের অংশে পুষ্টি জোগায়। এটি অকাল অন্ধত্ব থেকে চোখকে রক্ষা করে। এতে প্রচুর পরিমাণ আয়রনও আছে। এই শাক মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস থেকে শরীরকে রক্ষা করে। এমনকি গর্ভস্থ শিশুর মেধা বিকাশেও পালংশাকের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা নেয় পালংশাক। উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম ও অত্যন্ত সামান্য পরিমাণ সোডিয়াম আছে পালংশাকে। এ ছাড়া উপস্থিত ফোলেট হাইপারটেনশন কমায় ও রক্ত জালিকাকে রিল্যাক্স করে। পালংশাকে থাকা আলফা লিপোয়িক অ্যাসিড নামের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ও শরীরে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ায়। অ্যাজমা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর মধ্যে আছে বিটা ক্যারোটিন। ফাইবার এবং প্রচুর পরিমাণে জল আছে পালংশাকে।

ফলে পালংশাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং ডাইজেস্টিভ ট্র্যাককে সুস্থ রাখে। পালংশাকে ভিটামিন কে থাকে। মজবুত হাড়ের গঠনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান ভিটামিন কে। যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন কে আমাদের খাদ্য তালিকায় থাকলে তা ক্যালসিয়াম সংগ্রহে সাহায্য করে ও মুত্রের মাধ্যমে ক্যালসিয়ামের অতিরিক্ত বেরিয়ে যাওয়া আটকায়। পালংশাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, ও বি৬ রয়েছে। এগুলো চুল পড়া রোধ করার পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি করে। পালংশাকে থাকা সুণাভনয়েড অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। যা মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে। এটি মস্তিষ্কের বয়স কমানোর পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কের শক্তি অটুট রেখে অনেক বেশি বয়স পর্যন্ত স্নায়ুতন্ত্রকে নির্ভুলভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। এ শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। দৈনিক গড়ে ৩০ গ্রাম পালংশাক খেলে অ্যালঝাইমার্স রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। আসলে পালংশাকে উপস্থিত নাইট্রেট গরম করার পর নাইট্রাইটস-এ রূপান্তরিত হয়ে যায়। আর এই উপাদানটি শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। তাইতো পালংশাক রান্না করার সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিতসকেরা। না হলে এই গুণগুলোর কোনও সুফলই আপনি পাবেন না।

মাশরুম

সাধারণত মাশরুমের ফাইবার ও এনজাইম হজমে সহায়তা করে। এটি অস্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কাজ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং কোলন এর পুষ্টি উপাদান শোষণকেও বাড়াতে সাহায্য করে। মাশরুমের পুষ্টিমান তুলনামূলকভাবে অত্যধিক এবং এর প্রোটিন অতি উন্নতমানের এবং মানব দেহের জন্য অতিশয় উপকারী। একটি পরিপূর্ণ প্রোটিনের পূর্বশর্ত হলো মানব দেহের অত্যাবশ্যকীয় ৯টি অ্যাসিডের উপস্থিতি। মাশরুমে অতীব প্রয়োজনীয় ৯ টি অ্যামাইনো অ্যাসিড বিদ্যমান। অন্যান্য প্রাণিজ আমিষ যেমন -মাছ, মাংস, ডিম অতি নামি-দামি খাবার হলেও এতে চর্বি সম্পৃক্ত অবস্থায় থাকায় যা অতি মাত্রায় গ্রহণ করলে শরীরে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে, যার ফলে মেদ-ভুঁড়ির সৃষ্টি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ প্রভৃতি জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। মাশরুমের প্রোটিনে-ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অতি স্বল্প এবং কোলেস্টেরল ভাঙার উপাদান-লোভস্ট্রাটিন, অ্যান্টাডেনিন, ইরিটাডেনিন ও নায়াসিন থাকায় শরীরের কোলেস্টেরলস জমতে পারে না বরং মাশরুম খেলে শরীরে বহু দিনের জমানো কোলেস্টেরল ধীরে ধীরে বিনষ্ট হয়ে যায়। ১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে ২৫- ৩৫ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। পক্ষান্তরে আমরা যা অতি নামি-দামি খাবার হিসেবে মাছ, মাংস, ডিম খেয়ে থাকি তার মধ্যে ১০০ গ্রাম মাছ, মাংস ও ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ হলো যথাক্রমে ১৬-২২ গ্রাম, ২২-২৫ গ্রাম ও ১৩ গ্রাম মাত্র। মাশরুমে পলিফেনল ও সেলেনিয়াম নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এতে মানুষের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সালফারও থাকে। এ অত্যাবশ্যকীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো মারাত্মক কিছু রোগ, যেমন-স্ট্রোক, স্নায়ুতন্ত্রের রোগ এবং ক্যান্সার থেকে শরীরকে রক্ষা করে। এটি মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নিয়মিত মাশরুম খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার ও প্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। মাশরুমের ফাইটোকেমিক্যাল টিউমারের বৃদ্ধিতে বাঁধার সৃষ্টি করে। মাশরুমের ভিটামিন বি স্নায়ুর জন্য উপকারী এবং বয়সজনিত রোগ যেমন- অ্যালঝাইমার্স রোগ থেকে রক্ষা করে। মাশরুম খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। মাশরুমে এনজাইম ও প্রাকৃতিক ইনসুলিন থাকে, যা চিনিকে ভাঙতে পারে। এতে থাকা ফাইবার ও এনজাইম হজমে সহায়তা করে। এটি অস্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কাজ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং কোলনের পুষ্টি উপাদান শোষণকেও বাড়তে সাহায্য করে। মাশরুমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন-ডি আছে। শিশুদের দাঁত ও হাড় গঠনে এ উপাদানগুলো অত্যন্ত কার্যকরী। মাশরুমে নিউক্লিক অ্যাসিড ও অ্যান্টি অ্যালার্জেন থাকায় এবং সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকায় কিডনির রোগ ও অ্যালার্জি রোগের প্রতিরোধক। মাশরুমে স্ফিংগলিপিড এবং ভিটামিন-১২ বেশি থাকায় স্নায়ুতন্ত্র ও স্পাইনাল কর্ড সুস্থ রাখে। তাই মাশরুম খেলে হাইপার টেনশন দূর হয় এবং মেরুদণ্ড দৃঢ় থাকে। হেপাটাইটিস বি ও জন্ডিস প্রতিরোধ করে।অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। মাশরুমের খনিজ লবণ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। তাই মাশরুম একবার রান্নার পরে দ্বিতীয়বার গরম করে খেলে এই পুষ্টি গুণ নষ্ট হয় এবং তা আমাদের পেটের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর।

তেল

একই তেলে বারবার রান্না করা কোনও খাবার খাওয়া থেকে সাবধান থাকতে হবে। অনেকেই রাস্তার পাশে বা ফুটপাতের খাবার এ কারণেই এড়িয়ে যান। একই তেলে রান্না নানারকম খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যখন কোনও কিছু ভাজার জন্য তেল বেশি গরম করা হয়, তখন তেলের গঠন পরিবর্তন হয় এবং এতে বিষাক্ত উপাদান তৈরি হয়। এ তেল হৃদ্যন্ত্রের জন্য খারাপ। রক্তে বাজে কোলস্টেরল তৈরির জন্যও এই তেল দায়ী। তাই বারবার একই তেল ব্যবহার করে রান্না করা খাবার এড়িয়ে যান নিজের স্বাস্থ্যের জন্যই।

শালগম

স্যুপ বা তরকারিতে জনপ্রিয় একটি আইটেম শালগম। শালগমের নাইট্রেট দ্বিতীয়বার গরম করলেই বিষাক্ত নাইট্রাইট উৎপন্ন করে। অনেকেই আছেন যারা খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়া বা পচে যাওয়ার ভয়ে খাবার কয়েকবার গরম করে বা ফ্রীজে রাখেন। সেক্ষেত্রে যে সকল খাবার একাধিকবার গরম করা যায় না, সেসব খাবার ঠাণ্ডা স্থানে রাখতে পারেন যেখানে বাতাসের চলাচল ভালো। নতুবা আপনাকেই স্বাস্থ্য নিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হতে পারে।

স্যুপ

স্যুপে থাকা মাংস এবং সেলারি শাক কখনওই দ্বিতীয়বার গরম করে খাওয়া উচিত নয়। কারণ এতে তাদের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। তাই যারা একবারে গোটা মাসের শাকসবজি, মাছ-মাংসসহ আনুষঙ্গিক খাদ্যপণ্যের বাজার সেরে ফেলেন, এরপর তা ব্যবহার করতে থাকেন, তাঁরা একটু সাবধানেই থাকবেন। কারণ বুঝতেই পারছেন কতটা ক্ষতি করে একবার তৈরি করা খাবার পুনরায় গরম করে খেলে। এমনিতেই রেফ্রিজারেটরের কল্যাণে খাদ্যপণ্য নষ্ট হওয়ার কোনও আশঙ্কা থাকে না। ফলে বাসি খাবারও খাওয়া হয় নিয়মিতই। কিন্তু বাসি খাদ্য গ্রহণসত পুরনো হয়ে যাওয়ার পর খাবারের আনুষঙ্গিক উপাদানগুলোর ব্যবহার স্বাস্থ্যসম্মত তো নয়ই, একই সঙ্গে হয়ে উঠতে পারে অকালমৃত্যুর কারণ। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, খাবার প্রস্তুতে পুরনো উপাদান ব্যবহারে আয়ুষ্কাল হ্রাস পায়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দাবি করেছেন, দেহকোষের দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে পুরনো খাবার। দেহকোষের ক্ষয় বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের যৌবনও ফুরিয়ে আসতে থাকে। ধীরে ধীরে শরীরে ডিএনএ-প্রোটিন সংযোগও ক্ষয় পেতে থাকে। শ্বসনক্রিয়া ও কোষের এনজাইম ফাংশনও ধীর হয়ে আসতে থাকে। এক পর্যায়ে শরীর এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে, ফুরিয়ে যায় আয়ু। মানুষ পতিত হয় মৃত্যুমুখে।

Archive

Most Popular

ঋতু পরিবর্তনে সুস্থ থাকুন, ঘরোয়া টোটকায় ..

21st Nov 2024

প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিনিধি

Read More