2nd Nov 2024
প্রতিবেদন
নিজস্ব প্রতিনিধি
কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের দ্বিতীয়ার দিনে পালিত হয় ভাইফোঁটা। সেদিন বাঙালির ঘরে ঘরে শঙ্খ বাজিয়ে, পাখা দিয়ে হাওয়া করে, মিষ্টি মুখ করিয়ে ভাইেয়র কপালে চন্দনের ফোঁটা দেওয়া হয়। সঙ্গে উপহারের ডালি তো রয়েছেই।
কেন এইদিনে ভাইফোঁটা হয়?
এই বিশেষ দিনে নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তার বোন সুভদ্রার কাছে যান আর তখন সুভদ্রা ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টিও খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন শুরু হয় দেশে। ভাইফোঁটার দিন বোনেরা তাদের ভাইদের কপালে চন্দন বা দই বা কাজলের ফোঁটা পরিয়ে দিয়ে বলেন, ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।
এই বিশেষ তিথিটি যম দ্বিতীয়া নামে পরিচিত। এই দিনে বা তিথিতে বোন যমুনার বাড়ি গিয়েছিলেন ভাই যমরাজ। সেদিন যমুনার হাতের রান্না করা খাবার খান যম। খাবার খেয়ে খুব খুশি হন তিনি। তখন বোন যমুনা তাঁর দাদার কাছ থেকে আশীর্বাদ চান। বোনকে আশীর্বাদ করে যমরাজ সেদিন বলেন, যে ভাই এই বিশেষ তিথিতে তাঁর বোনের বাড়ি গিয়ে বোনের হাতের রান্না খাবেন, তাঁর অকালমৃত্যুর কোনও ভয় থাকবে না। আর এই ঘটনার পর থেকেই এই দিনটি পালন করা হয়ে থাকে।
বিশেষ নিয়ম:
এদিন ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দেওয়ার আগে পুজোর থালি সুন্দর করে সাজিয়ে নিন।
সিঁদুর, চন্দন, ফল, ফুল, মিষ্টি, নারকেল, দুর্বা প্লেটে সাজিয়ে রাখা হয়। এই থালি নিয়ে বাড়ির অধিষ্ঠিত ঈশ্বরের কাছে পুজো করা খুব শুভ।
বিভিন্ন রকমের ফুল, ধান, দুর্বা ঘাস, তিলক, শঙ্খ, প্রদীপ দিয়ে সাজিয়ে রাখুন।
পাশাপাশি থালা সাজিয়ে বাটি ভরে পায়েস, মিষ্টি, ভাইফোঁটার মিষ্টি, লুচি সাজিয়ে ভাইদের হাতে বোনেদের তুলে দিতে হয়।
বোনেরা সকাল-সকাল শিশির ধরার জন্য কাপড় দিয়ে শিশির ভেজা ঘাস থেকে শিশির জোগাড় করে থাকেন। তবে বর্তমানে এই রীতি প্রায় উধাও। কারণ শিশির ভেজা ঘাস এখন চোখে দেখা ভার।
এরপর স্নান সেরে সুন্দর ও নতুন কাপড় পড়ে ভাইফোঁটার সব সামগ্রী সাজিয়ে রাখা উচিত।
এবার ভাইয়ের মাথায় বাঁ হাত দিয়ে তিনবার ধান-দুব্বো দিয়ে আশীর্বাদ করতে হয়।
তারপর হাতের কড়ে আঙুল দিয়ে ভাইয়ের কপালে তিনবার চন্দনের ফোঁটা দিয়ে ভাইফোঁটার মন্ত্র উচ্চারণ করুন।
ফোঁটা দেওয়া হলে পছন্দের উপহার দিতে পারেন..