7th Dec 2024
ভ্রমণ
নিজস্ব প্রতিনিধি
শ্যামসুন্দরপুর! শুনে মনে হতে পারে এ বুঝি কোনও বৈষ্ণব তীর্থ। বা মনে হতে পারে বৃন্দাবনের কাছে। না, কোনও তীর্থস্থান নয়, বৃন্দাবনের কাছেও নয়। শ্যামসুন্দরপুর নদীর ধারে নিরিবিলি কোলাহলমুক্ত এক চমৎকার জায়গা। এই বেড়ানোতে থাকবে ভারতীয়-সহ বাঙালির কাছে এক পবিত্র এবং প্রিয় নদী। যে-নদীর আকর্ষণে বারবার তার বুকে ভেসে যায় নৌকায় কিংবা পাড়ে বসে সময় কাটায়। সেই নদীর নাম গঙ্গা। সকলের কাছেই বড় কাছের নদী, প্রিয় নদী।
গঙ্গার ধারে শীতের নরম রোদ্দুর বড়ই প্রাণবন্ত। ভোরের শিশির লুটোপুটি খায় ভোরের নরম রোদ্দুরে। মাছরাঙা ছোঁ মেরে মাছ তুলে নেয় গঙ্গার বুক থেকে, ডুব দেয় পানকৌড়ি। কখনওসখনও ডেকে ডেকে যায় আকাশপথে ডানা মেলে উড়ে যাওয়া পরিযায়ী পাখির দল! মন করে ওঠে আনচান! অপূর্ব এক মায়া জাদু খেলা করে শ্যামসুন্দরপুরে গঙ্গার ধারে এলে। গঙ্গার এমন মজা পাবেন শ্যামসুন্দরপুরের অ্যাকোয়া রিট্রিটে এলে। এখানকার সুইমিং পুল একেবারে গঙ্গার কোল ঘেঁষে। পুলে সাঁতার কাটলে মনে হবে বুঝি গঙ্গায় সাঁতার দিচ্ছেন।
অ্যাকোয়া রিট্রিটটি একেবারে গঙ্গার ধারে। শীতের ছোট ছুটিতে অবকাশ যাপনের পক্ষে দারুণ জায়গা। গঙ্গার ধারে শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের কাছাকাছি আরও একটি জনপ্রিয় এবং চমৎকার জায়গা ডায়মন্ড হারবার। দূরত্ব ২০-২২ কিমি। নিরিবিলি সুন্দর সবুজ একটি গ্রাম শ্যামসুন্দরপুর। গঙ্গা এখানে বিশাল। নদীর বুকে অনবরত চলেছে অনবরত নৌকা এবং অন্যান্য জলযান। শীতে গঙ্গার রূপ অন্যরকম।
নীল আকাশ জুড়ে সাদা মেঘের ভেলার ফাঁকে চুইয়ে পড়া রোদ্দুরে অপূর্ব লাগে নদীর জলে ভেসে যাওয়া সূর্যকিরণ! আর বর্ষার নদী আরও সুন্দর। নদীর জলছোঁয়া উদাসী শীতের বাতাস ভাললাগে বেশ। অবশ্যই পিঠে মিঠেকড়া রোদ্দুর লাগিয়ে। সূর্যাস্তের গঙ্গার জলে খেলে যায় জাদু। ভোরের বেলা সূর্যোদয়ের সময় দেখা যায় নদীর শান্ত স্নিগ্ধ রূপ। আবার চাঁদনি রাতে ভরা জ্যোৎস্নায় গঙ্গার অন্য রূপ। সেই মুগ্ধ হতেই হবে। তার সঙ্গে যদি মিশেল হয় নৌকার বয়ে যাওয়ার ছলাৎছল ছলাৎছল শব্দ! মনে হবে, এ বড় সুখের সময় এ বড় ভাললাগার সময়! অ্যাকোয়া রিট্রিট লনের গা-বেয়েই বয়ে চলেছে নদী। লনের এদিক-ওদিক বসবার জায়গা। নিরিবিলিতে বসে বসে দিনভর দেখা যায় গঙ্গা। নদীর বুকে বয়ে চলে মাছধরা নৌকা। চলে রৌদ্র-ছায়ার খেলা। জ্যোৎস্না রাতে মায়াময় নদীতে সৃষ্টি হয় কবিতার মতো পরিবেশ! সবমিলিয়ে জমে যায় অবসর যাপনের দিনলিপি।