13th Jul 2024
প্রতিবেদন
অরিন্দম সরকার
পাইস হোটেলের গল্পের শুরু থেকে শেষ সবটাই কলকাতা কেন্দ্রিক। এমনটা নয় , পাইস হোটেলের অস্তিত্ব কলকাতার বাইরে নেই। তবে বাংলায় ব্রিটিশ শাসন কলকাতা কেন্দ্রিক হবার জন্য পাইস হোটেলের জন্ম কলকাতাতেই হয়। এই হোটেলগুলোর গল্প শুরু করার আগে যদি কলকাতার সেকালের কিছু কথা না বলি তাহলে প্রায় দেড়শ বছর আগে শুরু হয়ে আজও কলকাতার বুকে ঝা চকচকে দেশি বিদেশি খাবারের রেস্তোরাঁর মাঝে অতি সাধারণ বাড়ির মা মাসির হাতের রান্নার পদ নিয়ে এই পাইস হোটেল কিভাবে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে যাবে।
শুরু করা যাক কলকাতার গল্প দিয়ে। সর্বশেষ আদমসুমারি অনুযায়ী কলকাতার জনসংখ্যা প্রায় দেড় লাখ । ১৮৭৬ এর জনগণনায় এই পরিসংখ্যান ছিল চার লাখের আসে পাশে - যার সিংহভাগই ছিল বাঙালি। কেউ কেউ কলকাতা, সুতানুটি বা গোবিন্দপুর গ্রামের আবার বেশ অনেকেই এসেছিলেন পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে নিজেদের ভাগ্য অন্বেষণে । পুরো জনজাতির বেশির ভাগই থাকতেন ব্ল্যাক টাউনে । প্রসঙ্গত বলে রাখি, কলকাতা তখন বিভক্ত ছিল দুই ভাগে। হয়াইট টাউন - যেখানে থাকতেন সাহেবরা। মানে ঐ - পার্ক স্ট্রিট, থিয়েটার রোড, শেক্সপিয়ার সরণী, চৌরঙ্গী চত্বরটা । আর বাঙালিরা থাকতেন আজকের উত্তর কলকাতা এলাকায় - যা তখনকার দিনে ব্ল্যাক টাউন নামে ব্রিটিশদের কাছে পরিচিত ছিল। এখানে গরীব বড়লোকের একইসাথে অবস্থান ছিল। কুমোর কামার গোয়ালা দরজি ধোপা নাপিত জেলে থেকে সরকারি কর্মচারী, কেরানি, আইনজীবী, ব্যবসাদার সবাই একই এলাকায় থাকতেন। বাইরের জেলাগুলি থেকে কর্মসূত্রে যারা কলকাতায় আসতেন তাদের থাকার জন্য গড়ে উঠল মেসবাড়ি । থাকা খাওয়া বা শুধু থাকার জন্য নেওয়া হত মাসিক কিছু পরিমান অর্থ। পয়সা বেশি লাগলেও মানুষের কিছু করার ছিল না, তখন যাতায়াত ব্যবস্থা এত আধুনিক হয় নি, বাড়ি ফিরে পরের দিন আবার দপ্তরে আসার সময়ে কুলাবে দেখেই বেশি পয়সা দিয়ে মানুষকে থাকতে হত। কেউ যদি রান্নার ব্যবস্থ্যা করতে পারতেন তার অবশ্য খাবারের খরচা বেশ কিছুটা সাশ্রয় হত।
উনিশ শতকে সাহেবদের সংস্পর্শে এসে যে সব কলকাতার বাবুরা গ্রামে গঞ্জে জমিদারি কিনেছিলেন, তাদের অনেকেরই ব্যভিচারিতার জন্য জমিদারি উঠতে বসেছিল। এমন সময় তাদের বাড়ির রান্নার ঠাকুরেরা, যারা মূলতঃ উড়িষ্যার মানুষ তারা সেই সব বাড়িতে কাজ ছেড়ে কলকাতার সদ্য তৈরী হওয়া জনজোয়ারে গা ভাসালেন। বাড়ির কৌলিন্য রক্ষার জন্য অন্দরমহলের রান্নাঘরে যে সব উড়ে বামুনের প্রবেশ হয়েছিল তাদের অনেকেই জমিদার বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে শুরু করলেন খাবারের ব্যবসা, আদৰ্শ হিন্দু হোটেল। বামুনের হাতের রান্না, তাও আবার উড়িয়া - তখনকার কর্মসুত্রে বাড়ি ছাড়া বাঙালি হিন্দু সমাজের কাছে এক স্বস্তির স্বাদ। সকালবেলা একে আপিসে যাবার তাড়া, তার উপর রান্না করার ঝামেলা থেকে ঠাকুরা মুক্তি দিলেন এনাদের।
প্রসঙ্গত বলে রাখি, একটু কমিয়ুনাল লাগলেও এটা সত্যি যে, বাঙালি হিন্দুরা যেভাবে সাহেবদের সাথে মিশেছে সেইভাবে তখনকার মুসলমান সমাজ ব্রিটিশদের সাথে মিশতে পারেনি। পলাশীর যুদ্ধের পর তিনটি গ্রাম নিয়ে নতুন কলকাতা শহর যখন গড়ে উঠছে হিন্দু বাঙালিরা দেখল এখানে কাজের সুযোগ আছে। কোনোভাবে কলকাতা এসে যদি একটু ইংরেজি শিখে নিয়ে কোনো দপ্তরে লেগে যাওয়া যায় তাহলে কেল্লা ফতে । কারন ইংরেজরা একবার রাইটার্সদের বিলেত থেকে নিয়ে এসে বুঝে গিয়েছিল ধান আর চালের মূল্য। দেশি কর্মচারিরা অনেক সস্তা, তাদের থাকা খাওয়ার দায় দায়িত্ব ইংরেজদের নিতে হয় না - রাইটার্স বিল্ডিং বানানোর ব্যথা সাহেবদের সহজে যায় নি। তাই তাদের কাছে দেশি কর্মচারীরা প্রথম পছন্দের । আমাদের সাধারণ হিন্দু ঘরের বাঙালিদের মধ্যে চাকরি করার যে প্রবণতা, তার শুরু কিন্তু এখান থেকেই। এমন নয় যে বাঙালি ব্যবসা করতো না - নুন, জাহাজে পণ্য আদান প্রদান থেকে শুরু করে জাহাজের ব্যবসা, তেজারতি কারবার প্রভৃতি। এমনকি বিদ্যাসাগর মশাইয়ের নিজস্ব ছাপাখানার ব্যবসা ছিল। অপরদিকে তখনকার মুসলমানরা ইংরেজদের শত্রু মনে করতো। পলাশী বক্সারের যুদ্ধ থেকে শুরু করে সিপাহী বিদ্রোহের সময় নবাব ওয়াজিদ আলী শাহকে গদিচ্যুৎ করা, বাদশাহ বাহাদুর শাহ জাফরকে রেঙ্গুনে পাঠানো সবেতেই মুসলমান বনাম ইংরেজ। এই কারনেই তাদের সাথে সাহেবদের দুরুত্ব বাড়তে থাকে আর সেটাকে কাজে লাগায় বাঙালি হিন্দুরা। আরো একটা কারন আছে, মুসলমান শাসকদের হাতে কয়েকশ বছর শোষিত হবার পর যখন নতুন শাসক এল, কয়েকদিন পর থেকে তারা শোষণ শুরু করলেও তাদের পরিত্রাতা মনে করতে শুরু করেছিল বাঙালি হিন্দু সমাজ। সখ্যতা বেড়ে উঠলেও ম্লেচ্ছদের ছোঁয়াছানি লাগতে তারা গঙ্গা নাইতে ছাড়তেন না।
যাই হোক, আমরা ফিরে আসি আমাদের আসল গল্পে। পাইস হোটেল। এই উড়ে বামুনরা ভাত ডাল তরকারি মাছ মাংস - যা কিছু জমিদার বাড়িতে রান্না করতেন সেটাই শুরু করলেন নিজের দোকানে। ভাত, ডাল, সাথে একটা ভাজা - এর বদলে একটা অর্থ বরাদ্দ। তার সাথে তরকারি / সবজি নিলে ওটার জন্য আলাদা অর্থ, মাছ এবং বিভিন্ন প্রকারের মাছের জন্য আলাদা আলাদা মূল্য, মাংসের জন্য আলাদা মূল্য। মাংস হলে সেটা খাসি বা পাঁঠার মাংস, মুরগি কোনো ভাবেই নয়। তখনকার মানসিকতা ছিল মুরগি ম্লেচ্ছরা খায়, তাই আমাদের রান্নাঘরে রামপাখি বা মুরগির গৃহপ্রবেশ অনেক পরে হয়েছে। ডিম হলে সেটাও হাঁসের ডিমই খেতেন সেই সময়ে। অর্থ বলতে তখন পয়সার বিনিময়েই লোকে খেতেন - সেখান থেকেই নাম হয় পাইস হোটেল।
এবারে কটা উড়িয়া পাইস হোটেলের নাম বলি যাদের মধ্যে কেউ একশ বছরের কাছাকাছি, কেউ একশ বছর পার করে আজও কলকাতার বুকে ছাত্র থেকে দপ্তরীদের সকাল দুপুরের খাবার খাইয়ে চলেছেন।
প্রথমেই বলব, মানো গোবিন্দ পান্ডার হাতে তৈরী কলেজ স্ট্রিটে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির পাশের গলিতে ১৯২৭ সালের স্বাধীন ভারত হিন্দু হোটেল। আগে নাম ছিল শুধু "হিন্দু হোটেল", ভারতবর্ষ স্বাধীন হবার পর দোকানের নাম পরিবর্তন হয়ে হয় স্বাধীন ভারত হিন্দু হোটেল - কারন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস থেকে শুরু করে বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী এখানে আসতেন, খেতেন, মিটিং চলত। সেই স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অনুপ্রেরণাতেই স্বাধীন ভারত হিন্দু হোটেল। এরপর বলব, ১৫০ বছরের ও বেশি সময় ধরে আজও খাইয়ে চলেছে ৪০ কৈলাশ বোস স্ট্রিটের জগন্মাতা ভোজনালয়। এখনো সেই জীর্ণ শীর্ণ বাড়িতে মেঝেতে বসে কাঁসার থালায় খাওয়ানো হয়। টেবিল চেয়ারের ব্যবস্থ্যা থাকলেও মেঝেতে বসে খাবার রীতিটা এখনো ওনারা চালিয়ে যাচ্ছেন। একশ বছর আগের আরো একটা পাইস হোটেল কলেজ স্ট্রিটের জগন্নাথ হোটেল। আদি কলেজস্ট্রিট মার্কেটে দোকানটা শুরু হবার পর মিউনিসিপ্যালিটি থেকে মার্কেট ভাঙলো তখন বার দুয়েক জায়গা পরিবর্তন করে ওনারা আজও কাঁসার থালা আর কলাপাতায় মানুষকে খাইয়ে চলেছেন কলেজস্ট্রিটের বর্ণপরিচয় মার্কেটে। বড়বাজার এলাকার একশ বছরেরও বেশি পুরোনো কালিকা হিন্দু হোটেলকেই বা কি করে বাদ দেওয়া যায় বলুন। তিন পুরুষের ব্যবসা, মৃত্যুঞ্জয় দাস যেভাবে ব্যবসা শুরু করেছিলেন সেই ভাবেই তৃতীয় এখনো এগিয়ে নিয়ে চলছেন, আজও ওনাদের একটা ঘর বরাদ্দ আসন পেতে কাঁসার থালায় মাটিতে বসে খাওয়ার জন্য।
দিন যত এগিয়েছে, এগিয়ে এসেছেন বাঙালিরাও। লাভজনক ব্যবসা, খাবার ভালো হলে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় না। এরকমই কয়েকটা বাঙালি পরিচালিত পাইস হোটেলের নাম বলতেই হবে এখানে। সবার প্রথমে যে নামটা মনে আসছে সেটা হল, খিদিরপুরের ৯৮ বছরের পুরানো ইয়ং বেঙ্গল হোটেল। ওপার বাংলার তারাপদ গুহ রায় মানুষকে সস্তায় করাবার খাওয়াবেন বলে ই ব্যবসা শুরু করেন যা আজ শতাব্দী ছুঁতে চলেছে। কলকাতার বুকে দাঁড়িয়ে আজও এখানে গ্যাস নয়, উনুনে রান্না হয়। আরেকটা পাইস হোটেলের কথা এখানে না বলে থাকতে পারছি না, মোটামুটি ৮৫ বছরের পুরোনো সিদ্ধেশ্বরী আশ্রম। বর্ধমান নিবাসী ক্ষুদিরাম সরকারের হাত ধরে চলা শুরু করে আজও কাঠ কয়লার উনুনে রান্না করে ওনারা মানুষকে খাইয়ে আসছেন। ওনাদের আগে মেসবাড়িও ছিল, বর্তমানে বন্ধ। শহর বড় হচ্ছে, বারুইপুর থেকে বারাসাত এখন কলকাতায় অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেছে। তাই থাকার জায়গার অভাব অনেকটাই কমেছে, সাথে উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা। ফলে, মানুষকে আর পরিবার ছেড়ে মেসবাড়িতে পরে থাকতে হয় না আগের মত।
মেসবাড়ি বলতে মনে পড়ল আরেকটা মেশবাড়ি ছিল, এখন শুধুমাত্র পাইস হোটেলটাই রয়েছে। ১৯১৭ সালে শুরু হওয়া ৬৬ মহাত্মা গান্ধী রোডের এই মেষবাড়িতেই থেকেছেন বহুবছর জীবনানন্দ, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত কথাশিল্পীরা। কতটা সত্যি জানি না, শরদিন্দু নাকি ব্যোমকেশ এই বাড়িতে বসেই লিখেছিলেন। তখন বাড়ির নাম ছিল প্রেসিডেন্সি বোর্ডিং হাউস। ঐ, শহর বেড়েছে, মানুষের রাতের বেলা মাথায় গোজা নিয়ে আর তেমন মাথা ব্যথা নেই। তাই মেসবাড়ি উঠে গিয়ে তারই রান্না ঘরে ১৯৯১ থেকে শুরু হল প্রেসিডেন্সি বোর্ডিং হাউসের রান্না ঘরে মহল ভাতের হোটেল।
আরেকটা একটা হোটেলের নাম বলছি, লোকমুখে উকিল বাবুর হোটেল নামে বিখ্যাত। হাইকোর্টের সামনে প্রায় দেড়শ বছরের পুরানো হেস্টিংস রেস্টুরেন্ট এন্ড ইটিং হাউস। ১৮৮৫ সালে তৈরি হোটেলটা শুরু হলেও মালিকানা বদল হয়েছে। বর্তমানে যারা চালাচ্ছেন ওনারা মোটামুটি ১৯৪২ সাল থেকে এখানে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন অনেকেই বলতে পারেন সব পাইস হোটেলই কি উত্তর কলকাতার দিকে, দক্ষিণে কি কিছুই নেই... দক্ষিণে দপ্তর স্কুল কলেজ বাড়ার সাথে সাথে শুরু হয় এই পাইস হোটেলের ব্যবসা । তবে মেশবাড়ির চল উত্তরে যতটা দেখা গেছিল, দক্ষিণে এতটা কোনো কালেই ছিল না। দক্ষিণের কথা মাথায় আসলেই এক এবং অদ্বিতীয় যে দোকানটার কথা মাথায় আসে তা হল তরুণ নিকেতন। নামে তরুণ হলেও বয়স কিন্তু তার ১০৮ বছর। ডিম বলতে এখানে লোকজন এখনো হাঁসের ডিমই বোঝেন। হ্যাঁ, হাল আমলে মানুষের দাবি, আবদার, বায়না ইত্যাদি যা ই বলুন না কেন ওনারা মুরগির মাংস রাখা শুরু করেছেন। কিন্তু এখনো উত্তর কলকাতার বেশ কিছু পাইস হোটেল আছে যারা আজ অবধি মুরগি তাদের রান্না ঘরের দরজা দিয়ে ঢোকান নি।
চেষ্টা করলাম বেশ কিছু জায়গায় ঘুরে ঘুরে খেয়ে পুরোনো পাইস হোটেলের তথ্য সংগ্রহ করার। একালের পাইস হোটেলের কথা লিখবো ভাবছিলাম। কিন্তু লিখতে গিয়ে দেখলাম, ফেসবুকে লাখ লাখ কোটি কোটি মানুষের ভিউস হওয়া দিদি এবং দাদাদের পাইস হোটেল যেখানে খাবার কম ঝগড়া বেশি। সবাই ঐ সব দেখে নিয়েছেন, তাই আলাদা করে সেই সব কথা ঝগড়া মারপিটের দৃশ্য লিখতে কেমন একটা লাগছে। লি লিখব! আপনারা দেখতে পাচ্ছেন গাইস, কাগজের থালার ওপর কলাপাতা রেখে এস-স্মার্ট দিদি ভাত আর ডাল দিলেন। গ্রাহক তরকারি নুন বেশি হয়েছে বলার পর দিদি বাবা কাকু হাতা দিয়ে গ্রাহকের মাথায় প্রহার করলেন। শেষ পাতে বড্ড ছড়িয়ে যাচ্ছে ব্যাপারটা না চাইতেও। তবুও যদি নস্টালজিয়া ছুঁয়ে আসি, তাহলে বলব গ্রাজুয়েশনটা আশুতোষ কলেজে পড়ার সময় ভবানীপুর থানার কাছে বনফুলে বেশ অনেক সময়েই খেয়েছি। মাঝে বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর বছর দুই তিনেক হল তারা একদম ঝা চকচকে রূপ নিয়ে ফিরে এসেছেন। দেখে ভালো লাগলো, যাবার ইচ্ছে জাগলেও যাবার সময়টা এখনো হয়ে ওঠে নি। চেষ্টা করেছি পুরোনো দোকানগুলোতে যতটা সম্বব ঘুরে তথ্য নেবার। গরমে ঘুরে খেয়ে তথ্যে যদি একটু নুন বেশি কম হয়ে যায় তাহলে একটু নিজ গুণে ক্ষমা করে দেবেন দয়া করে।