21st Aug 2024
প্রতিবেদন
নিজস্ব প্রতিনিধি
আমি ভয় করব না ভয় করব না...
অকুতোভয়। জীবন প্রতি মুহূর্তে মরণের হাত ধরে চলে। কিন্তু তাঁকে রুখবে সাধ্য কার? এ বিপ্লবী যে ব্রিটিশের ত্রাস।
বিপ্লবী চন্দ্র শেখর আজাদের ভয়ে কেন কাঁপত ব্রিটিশ বাহিনীI ২৩ শে জুলাই এমন একজন বিপ্লবীর জন্মদিন; যাকে শুধু জীবিত অবস্থায় নয়; মৃত অবস্থাতেও ভয় পেত ব্রিটিশ বাহিনী। কদিন আগেই গেল চন্দ্রশেখর আজাদের ১১৫ তম জন্মবার্ষিকী। বলা হয় ব্রিটিশরা চন্দ্রশেখর আজাদকে এতটাই ভয় পেতেন যে, যে গাছের তলায় উনি আত্মহত্যা করেন সেই গাছটিও কেটে ফেলা হয়। আজাদ হিসাবে পরিচিত; চন্দ্রশেখর আজাদ একজন ভারতীয় বিপ্লবী।
যিনি রামপ্রসাদ বিসমিলের মৃত্যুর পর 'হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন'কে পুনরায় গঠিত করেছিলেন 'হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান আর্মি' নামে। ভারতে সর্বাধিক সুপরিচিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে একজন হলেন চন্দ্রশেখর আজাদ। মধ্যপ্রদেশের আলিরাজপুর জেলার ভাওরা গ্রামে ১৯০৬ সালের ২৩ জুলাই আজাদের জন্ম হয়। মাত্র ১৫ বছর বয়েসে যোগ দেন অসহযোগ আন্দোলনে। সেই প্রথম গ্রেপ্তার হওয়া দেশের কাজে।
আজাদ তরুণ বিপ্লবী মনমোহননাথ গুপ্তের মাধ্যমে রামপ্রসাদ বিসমিলের সংস্পর্শে আসেন। বিপ্লবী জীবন শুরু সেই সময় থেকেই। হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে শুরু করেন।
বেশিরভাগ তহবিল সংগ্রহ করা হতো সরকারি সম্পত্তি ডাকাতির মাধ্যমে। কংগ্রেসের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও মতিলাল নেহরু নিয়মিত আজাদকে সমর্থন করতেন ও অর্থ প্রদান করতেন। জানা যায়, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির হওয়ার পরে তিনি তার নাম "আজাদ”; তার পিতার নাম "স্বাধীনতা” এবং তার বাসস্থান "জেল" বলেছিলেন। সেই দিন থেকে তিনি মানুষের মধ্যে চন্দ্রশেখর আজাদ নামে পরিচিত হন।
উর্দুতে 'মুক্ত' অর্থ হিসাবে; তিনি শেষ নাম আজাদ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ব্রিটিশ পুলিশকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তারা তাঁকে জীবিত ধরতে পারবে না। তাই ধরা পরে গেলে তিনি আত্মহত্যা করেন।
১৯২৫ সালে কাকোরি ট্রেন ডাকাতির পর তিনি খুব জনপ্রিয় হন। ১৯২৮ সালে সহকারী সুপারেনটেনডেন্ট সান্ডারসকে হত্যা করেন তিনি।
১৯৩১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি এলাহাবাদে আলফ্রেড পার্কে চন্দ্রশেখর আজাদ মারা যান। সেই পার্কে তিনি নিজেকে এবং সুখদেব রাজকে রক্ষা করার জন্য আহত হন। সেইদিন সুখদেব রাজা পালিয়ে যেতে পারলেও তিনি পারেননি। শেষ বুলেট দিয়ে নিজেকে হত্যা করেছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর আলফ্রেড পার্কের নাম বদল করে চন্দ্রশেখর আজাদ পার্ক রাখা হয়। তাই চিরকাল ব্রিটিশ প্রশাসন ওঁকে ভয় পেয়ে এসেছে। মৃত্যুর পরেও ওঁর নামেই তাঁদের ভয়।