1st Sep 2024
প্রতিবেদন
নিজস্ব প্রতিনিধি
হিন্দুদের কাছে গণেশ চতুর্থীর গুরুত্ব অপরিসীম। এই দিন থেকেই বাড়িতে বাড়িতে গণপতি বাপ্পার মূর্তি স্থাপন করে পুজো করা হয়। হিন্দু পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, টানা ১০ দিন ধরে গণেশের মূর্তি স্থাপন করা থাকে। গণেশ স্বভাবে খুব ভোজন প্রিয়। তাই এই সময় তাঁর ভোগে মোদক ও নানাবিধ মিষ্টি নিবেদন করা হয়। এছাড়া নিবেদন করা হয় দূর্বা ঘাস। গণেশ পুজোয় দূর্বা ঘাস অর্পনের বিশেষ তাত্পর্য রয়েছে। কারণ দূর্বা ছাড়া গণেশ পুজো অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়। তাই দূর্বা নিবেদন করলে সব সুখ ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। ফুলে ফেঁপে ওঠে ব্যবসা ও উন্নতি হয় আর্থিক অবস্থার।
পৌরাণিক কাহিনী:
অনলাসুর নামক এক দৈত্য ছিল। সমস্ত দেবতা মিলেও তাঁর আতঙ্ক শেষ করতে পারেন না। তখন দেবতারা গণেশের কাছে অনলাসুরের হাত থেকে মুক্তি লাভের প্রার্থনা করেন। গণেশ সেই দৈত্যকে গিলে যান। এর পর গণেশের পেটে তীব্র জ্বালা শুরু হয়। তাঁর কষ্ট দূর করার জন্য সমস্ত ঋষি-মুনিরা গণেশকে দূর্বা খেতে দেন। মনে করা হয় তার পর থেকেই গণেশকে দূর্বা অর্পণের প্রথা শুরু হয়।
দূর্বা কে?
দূর্বা দূব, অমৃতা, অনন্তা, মহৌষধি ইত্যাদি নামে পরিচিত। ভারতে সমস্ত শুভ অনুষ্ঠানে হলুদ ও দূর্বার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। বিবাহে দূর্বা দিয়ে হলুদ ছেটানো হয়। মনে করা হয় যে নব বর-বধূর ওপর সৌভাগ্য বর্ষণ করা হচ্ছে। শাস্ত্র মতে নরসিংহ অবতারের সময় বিষ্ণুর চুল পৃথিবীতে পড়ে, তা থেকেই দূর্বা ও কুশের জন্ম হয়।
কীভাবে দূর্বা নিবেদন করবেন?
গণেশকে এক বিশেষ পদ্ধতিতে দূর্বা অর্পণ করা হয়। দূর্বার জোড়া বানিয়ে গণেশকে অর্পণ করবেন। ২২টি দূর্বা এক সঙ্গে জুড়ে ১১ জোড়া দূর্বা তৈরি করুন। গণেশকে এই ১১ জোড়া দূর্বা অর্পণ করা উচিত।
জেনে নিন বাড়িতে কীভাবে পুজো করলে আসবে শান্তি এবং সমৃদ্ধি।
শ্বেত গণেশ:
অনেকে বিশ্বাস করেন, বাড়ির ঠাকুরঘরে সাদা গণেশের মূর্তি স্থাপন করলে পরিবারে অশান্তির আশঙ্কা কমে। সেইসঙ্গে পরিবারে সমৃদ্ধি ছোঁয়া লাগে। তাই এবার থেকে গণেশ মূর্তি বাড়ি আনলে সাদা মার্বেলের মূর্তি আনুন!
হাতে মোদক এবং বাহন:
গণেশের হাতে মোদক এবং পায়ের কাছে বাহন, এমন মূর্তি বাড়িতে রাখলে গৃহের সুখ-শান্তি বজায় থাকে, তেমনি মানসিক শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
কোথায় স্থাপন করতে হবে গনেশ মূর্তি:
অনেকে গৃহের মঙ্গল ও ব্যবসার উন্নতি লাভের জন্য সিদ্ধিদাতার পুজো করেন। কিন্তু কোন স্থানে তাঁর মূর্তি স্থাপন করতে হবে, সে সম্পর্কে বেশিরভাগই জানেন না। তাই দিনের পর দিন আরাধনার পরেও তেমন কোনও ফল মেলে না। বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, বাড়ির পূর্বদিকে যদি গণেশ ঠাকুরের মূর্তি রাখা যায়, তাহলে সবথেকে বেশি সুফল মেলে। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে উত্তরদিকে রেখেও পুজো করতে পারেন।
শুঁড়:
সিদ্ধিদাতার মূর্তি আনার সময় খেয়াল রাখতে হবে, তার শুঁড় যেন ঠাকুরের বাঁ-হাতের দিকে বেঁকে থাকে। কারণ, বিশেষজ্ঞদের মতে এমন মূর্তি বাড়িতে রাখলে গৃহের উন্নতি হয়। সেইসঙ্গে অনেক বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।