29th Sep 2024
প্রতিবেদন
নিজস্ব প্রতিনিধি
অভিনব ব্যাপার। মোটামুটি ৩০০ বছরের পুজো। রামসীতা বাড়ির দুর্গাপুজো বলেই সবাই চেনে। এখানে মায়ের রূপ সম্পূর্ণ আলাদা। দেবী দ্বিবাহু বিশিষ্ট। এক হাতে রয়েছে বালক শিব। মায়ের সঙ্গে নেই ছেলেমেয়ে। নেই অসুরও। রূপ অভয়া। প্রথম দিন থেকেই এই রূপেই পুজো হয়ে আসছে বলে জানিয়েছে পরিবার।
দুর্গা প্রতিমা নদীতে ভাসানের সময় দু-তিনটে টিকটিকি আসে। প্রতি বছর। দুধ আলতা রং। যতক্ষণ টিকটিকি না আসে, প্রতিমা নিরঞ্জন সম্পূর্ণ হয় না। এটাই রেওয়াজ। বনেদি বাড়ির কর্তা বিসর্জন ঘাট থেকে ফি বছর অন্তত একটা টিকিটিকি পাঞ্জাবির পকেটে পুরে ঘরে ফেরেন। সেটি ছাড়া হয় পুজো দালানে। তাঁদের বিশ্বাস, দুর্গা মায়ের প্রেরিত এই টিকটিকির সূত্রেই পরের বছর পুজো পর্যন্ত সন্তান-সন্ততিদের নিয়ে সুখেশান্তিতে থাকবেন তাঁরা। আট পুরুষের এই পুজো বাড়িতে এমন অদ্ভুত ধারা এখনও অটুট।
এই বাড়ির সামনের দিকে পুজে দালানে রামসীতার প্রাচীন বিগ্রহ রয়েছে। সেখাে নিত্যপুজো হয়। সন্ধিপুজো এখনও শুরু হয় সাবেকি বন্দুক থেকে শূন্যে গুলি ছুঁড়ে। সপ্তমীতে সাত ভাজা, অষ্টমীতে আট ভাজা, নবমীতে নয় ভাজা নিবেদন করা হয় দেবীকে। পরিবারের রীতি মেনে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পুজো হয়। বোধনের দিন ধুনুচি নাচের মাধ্যমে দুর্গা মাকে আহ্বান জানানো হয়। পুজোর বাকি দিনগুলি রীতি রেওয়াজ মেনে পুজো হয়।
এই বাড়ির পুজো রাম সীতা বাড়ির পুজো নামেও পরিচিত। কিন্তু কেন রাম সীতা বাড়ির পুজো? বাড়ির সামনে পুজো দালানে রামসীতার প্রাচীন বিগ্রহ রয়েছে। রামনবমীতে বড় মেলা হয়। রামসীতা তাঁদের কুলদেবতাও বটে। সেই থেকে রামসীতা বাড়ির পুজো। এই বাড়িতে রামসীতার মূর্তি থাকায় সব পুত্রের সঙ্গে রামশব্দটি যুক্ত রাখতেই হয়। পূর্ব পুরুষ বলরাম, রামমোহন, রামদাস, রামরঞ্জন, রামরেণু, রামজীবন ও রামদাস। বর্তমানে রামনারায়ণের পুত্র রামতনু এই পুজো করছেন।