1st Oct 2024
বাড়িঘর
নিজস্ব প্রতিনিধি
উত্তর কলকাতার হাতিবাগান এলাকায় ঘুরলে এখনও সারি সারি পুরনো বাড়ি, ব্রিটিশ-গথিক স্থাপত্য, অলিগলি, চিলেকোঠা এক অন্যরকম আবেশে ভরিয়ে তোলে। সেই প্রাচীন হাতিবাগান অঞ্চলে ১৯৩৪ সালে হাতিবাগান নবীন পল্লীর পুজোর সূত্রপাত। ৯১ তম বর্ষে এবারের পুজোর থিমের নাম থিয়েটার পাড়া। এমনই এক অভিনব পরিকল্পনা বাস্তব রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছেন শিল্পী রাজু সরকার।
পুজোর কর্মকর্তাদের কথায়,
হাতিবাগানের রাজকৃষ্ণ স্ট্রীট আর থিয়েটার পাড়া এক সমার্থক শব্দ। যে রাস্তাটা আশির দশকে প্রতি শনি আর রবিবার দুপুর থেকে রাত অবধি পুলিশ দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হতো সেই রাস্তা আজ নিঝুম। কেনোনা হাতিবাগানের থিয়েটার পাড়া আজ অস্তমিত। স্বাধীনতার পরে সুস্থ বিনোদন যে মানুষের জীবনযাত্রায় কতটা কার্যকরী তা পেশাদারী থিয়েটার একটা সময় করে দেখিয়েছে। শ্যামলী, উল্কা, সেতু এইসব নাটকগুলি তার জলন্ত উদাহরণ। প্রাক স্বাধীনতা আমলে গিরিশ, অর্ধেন্দুশেখর, শিশির ভাদুড়ী থেকে শুরু করে বিনোদিনী, তিনকড়ি, তারাসুন্দরী ইত্যাদিরা যেভাবে বিভিন্ন সামাজিক ও পৌরাণিক নাটক দিয়ে মঞ্চ আলো করে দর্শকদের মনোরঞ্জন করে গেছেন তা ভোলার নয়। ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণের কথায় "থিয়েটারে লোকশিক্ষে হয়"। কিন্তু ৮০র দশকে বিশেষ করে টেলিভিশনের জনপ্রিয়তায় এই পেশাদারী থিয়েটারের জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং তা ক্রমশ অবলুপ্ত হতে থাকে। বিশ্বরূপা আজ বহুতল, রঙমহল আজ শপিং মল, সারকারিনা ভগ্নপ্রায়, স্টারে আর থিয়েটার হয় না, রঙ্গনাও অস্তমিত। তাই মঞ্চের সাথে হাতিবাগানের পেশাদারী থিয়েটার পাড়াটাও আজ অবলুপ্ত। হাতে গোনা দু একটি বিক্ষিপ্ত প্রয়াস হচ্ছে কিন্তু তাই দিয়ে ইতিহাসের ধারাকে চালু করা যায় না। তাই আসুন না, আবার আমরা সবাই একবার নতুন করে পেশাদারী থিয়েটারের ইতিহাস রচনা করি। চেষ্টা করি সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ভগ্নপ্রায় মঞ্চগুলির পুনরুদ্ধার করতে। জনমানসে হাতিবাগানের এই থিয়েটার পাড়াকে আবার স্বমহিমায় পুনরুজ্জীবিত করতে। তবেই তো সার্থক হবে আমাদের এই বছরের বিষয়ভাবনা।
সৃজনে: রাজু সরকার
আলোক নির্দেশনা: শ্যামল দাস
আবহ: শান্তি সরকার