21st Dec 2024

Highlights :

www.rojkarananya.com news

ইলিশের মাথা দিয়ে কচুশাক আর চালতার টক ভোগ হয় এই বাড়ির পুজোতে

2nd Oct 2024

প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিনিধি


বেহালা তথা কলকাতার সব থেকে পুরনো দুর্গাপুজো বললেই যে পুজোর কথা মাথায় আসে সেটা হল সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজো। ৯৭৫ সালে আদিশূর ছিলেন এই বাংলার শাসক। বাংলায় যাতে বিন্দু ধর্ম স্বমহিমায় বজায় থাকে তার জন্য তিনি কনৌজ থেকে ৫ জন ব্রাহ্মণকে নিয়ে আসেন। এঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বেদগর্ভ, যাঁকে এই সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের আদিপুরুষ হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে।

সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের দুর্গাপুজো কলকাতার সবথেকে পুরোনো পারিবারিক পুজো। জমিদার লক্ষ্মীকান্ত মজুমদার প্রথম আটচালার দুর্গা প্রতিমার পুজো শুরু করেন স্ত্রী ভগবতী দেবীর ইচ্ছেতে। সালটা ছিল ১৬১০। এই পরিবার মোট ৮ টি আলাদা আলাদা প্রতিমার পুজো করে থাকেন। এই প্রতিমা কিছুটা লাল রঙের বা হালকা সোনালী রঙের হয়। দশমহাবিদ্যা দ্বারা প্রভাবিত মা দুর্গার বিভিন্ন রূপের পূজা করা হয়। অসুরের রং সবুজ রঙের হয়। সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের দুর্গা পুজো বিদ্যাপতি রচিত দুর্গাভক্তিতরঙ্গিনীর উল্লেখিত নিয়ম বা রীতি মেনে সম্পন্ন হয়। প্রথমে এই পুজোটি বড়িশার জমিদার বাড়িতে চণ্ডীমণ্ডপ-এ হত। পরবর্তীকালে সকলেই যাতে এই পুজোর অংশ হয়ে উঠতে পারে সেই কারণে মোট আটটি পুজো শুরু করা হয়। এর মধ্যে শুধু বরিশাতেই ৬টি পুজো। সপ্তম পুজোটি হয় বিরাটিতে বিরতি বাড়ি পুজো এবং অষ্টম পুজোটি নিমতাতে, নিমতা পাঠানপুর বাড়ি পুজো। শাক্ত-শৈব-বৈষ্ণব, এই তিন ধারারই প্রভাব এই পুজোয় দেখা যায়।

সপ্তমী থেকে দশমী ১৮ টি ভাগে অন্নভোগ নিবেদন করা হয় মা দুর্গাকে। মুখে কাপড় বেঁধে রান্না করতে হয় ভোগ। এই পুজোর বিসর্জন প্রতিষ্ঠিত পুকুরেই হয়ে থাকে। দশমীর দিনে বিশেষ ভোগের রীতি রয়েছে। দশমীর দিন দেবীকে পান্তাভাত ও ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে কচুশাক ও চালতার চাটনি দেওয়া হয়.. পুজোর শেষে বাড়িতে তৈরি বোঁদে দিয়েই হয় দশমী পালন। দিন গড়িয়েছে, বছর গড়িয়েছে, সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের ঐতিহ্যময় অতীত এখন লোকের মুখে মুখে ফেরে।

Archive

Most Popular