24th Jan 2025
স্বাস্থ্য
নিজস্ব প্রতিনিধি
মোবাইল ফোন বেশি ব্যবহার করলে ব্রেন টিউমারের সম্ভাবনা বাড়ে। এই কথা ভুল। বলছেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ। কারণ যে ধরনের রেডিয়েশন থেকে ব্রেন টিউমার হয়ে থাকে, মোবাইল ফোনে সেই রেডিয়েশন হয় না। আবার একদল চিকিত্সা বিজ্ঞানীদের মতে, ভিনাইল ক্লোরাইড, এপস্টাইন-বার ভাইরাস এবং আয়নজনিত তেজস্ক্রিয়তা বা আয়োনিক রেডিয়েশন ব্রেন টিউমারের অন্যতম কারণ। ইংল্যান্ডে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অত্যধিক মোবাইল ব্যবহারের কারণে জন্ম নিচ্ছে ম্যালিগন্যান্ট বা ক্যানসার সৃষ্টিকারী টিউমার কোষ।
জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক হেলথ-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৯৫ থেকে ২০১৫ সাল-১০ বছর ধরে ব্রেন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগিদের ওপর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে ব্রেন ক্যানসারের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯৫ সালে প্রতি এক লাখে যেখানে ২.৪ জন ব্রেন ক্যানসারে আক্রান্ত হতেন সেখান ২০১৫ সালে আক্রান্ত হচ্ছেন ৫ জন! কেন এই দশ বছরে ব্রেন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগিদের হার বাড়ল? কারণ খুঁজে বের করতে গবেষকরা মূলত ব্রেন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগিদের লাইফস্টাইল নিয়ে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন। সেক্ষেত্রে তারা যে জায়গায় সবচেয়ে বেশি পার্থক্য দেখতে পেয়েছিলেন, সেটি হল মোবাইল ফোন ব্যবহারের হার। ১৯৯৫ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে মোবাইল ফোন ব্যবহারের হার দ্বিগুণ হয়েছে। সেই কারণেই গবেষকদের দাবি-অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার ব্রেন ক্যানসারের অন্যতম কারণ। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ম্যালিগন্যান্ট টিউমার প্রাথমিক পর্যায়ে কান এবং কপালের মধ্যবর্তী একটি জায়গায় জন্ম নেয়। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে ধীরে ধীরে তা ব্রেনে ছড়িয়ে পড়ে। কাজেই চিকিৎসকেরা বলছেন, কানে মোবাইল ধরে দীর্ঘক্ষণ কথা বলা মারাত্মক! প্রয়োজন হলে, লাউড স্পিকারে কথা বলুন।
ব্রেন টিউমারঃ ৮ লক্ষণ জেনে সাবধানে থাকুন
ক্যানসার এমনই একটি রোগ, যা যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে তত সেরে ওঠার সম্ভাবনা বাড়বে। কিন্তু ব্রেন ক্যানসার এমন একটি রোগ যা সহজে ধরা পড়ে না। আর যখন ধরা পড়ে, তখন অনেকটা সময়ই পেরিয়ে যায়।
তাই যে লক্ষণগুলি দেখে সাবধান হবেন
১) প্রবল মাথা যন্ত্রণায় কষ্ট পাওয়া। বিশেষ করে ভোরের দিকে এই ধরনের মাথা যন্ত্রণার শিকার হতে হয়।
২) যাঁদের মৃগী থাকে তাঁদের খুব সতর্ক থাকা উচিত। এঁদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৩) হঠাৎ হঠাৎ বমি হওয়া বা বমি ভাব দেখা দিলে সাবধান হোন।
৪) কথা জড়িয়ে যাওয়া বা ঠিকমতো কথা বলতে না পারাও একটি লক্ষণ।
৫) চলাফেরায় জড়তা চলে আসলে অবশ্যই সাবধান হোন। ব্রেন ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ এটি।
৬) প্রায়ই যদি জ্বর আসে তাহলেও বুঝবেন শরীরে বড় কিছু বাসা বাঁধছে।
৭) মাঝেই মাঝেই জানা জিনিসপত্র ভুলে যাচ্ছেন। পরিচিতদের নাম ভুলে যাচ্ছেন। তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৮) চোখ ঠিক থাকতেও মাঝে মাঝে কিছু ঝাপসা দেখলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সাধারণত মাথা যন্ত্রণা হলে সকলেই ধরে নেয়, সাইনাস, মাইগ্রেন-এর সমস্যা। কিন্তু সব সময়ে এমনটা হয় না। তবে সব ব্রেন টিউমারকেই আবার ক্যানসার বলা যায় না। যে ব্রেন টিউমারগুলি ম্যালিগন্যান্ট হয়, সেগুলিকেই ক্যানসার বলা যায়। কিন্তু যেগুলি ম্যালিগন্যান্ট নয়, সেগুলিকে অপারেশনের মাধ্যমে বের করে সুস্থ হওয়া সম্ভব।
ঘরোয়া পদ্ধতি
মাইগ্রেনের সমস্যা এখন হামেশাই দেখা যায়। প্রায় প্রতিটি পরিবারেই এক না একজন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। এই রোগের মূল উপসর্গ মাথা ব্যথা। এক্ষেত্রে মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা হয়। সেই যন্ত্রণা সহ্য করাও হয়ে যায় মুশকিল। এক্ষেত্রে যাঁর এই যন্ত্রণা রয়েছে, তিনিই একমাত্র বোঝেন এই সমস্যার অভিঘাত কতটা! এই ব্যথা হওয়ার সময় কোনও কাজ করা যায় না। তবে ব্যথা ছাড়াও বমি, বমিবমিভাবের মতো সমস্যাও দেখা যায়।
মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে অনেকের মাথার শুধু একটি অংশ ব্যথা করে। অনেকের আবার সমগ্র মাথায় ব্যথা হয়। এই সমগ্র মাথা ব্যথা করা ব্যক্তিদের সমস্যা সবথেকে বেশি হয়। কেন এই সমস্যা দেখা দেয় তা নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা চলছে। তবে এখনও মাইগ্রেনের নেপথ্যে কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং কোনও গন্ধ, কোনও খাবার, আলো, দুশ্চিন্তার মতো জিনিসগুলিতেই মাইগ্রেন টিগার করে। শুরু হয় অসহ্য যন্ত্রণা।
সমাধানে ঘরোয়া উপায়
আদা চা
আদার মধ্যে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা মাইগ্রেনের সমস্যা কমাতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হলেই এককাপ আদা চা রসিয়ে খেয়ে ফেলুন। সমস্যা থাকবে দূরে। এক্ষেত্রে চাইলে আপনি কাঁচা আদাও রোজ সকালে খেতে পারেন।
অশ্বগন্ধা
এই ভেষজটি ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়ে এসেছে। এক্ষেত্রে মাইগ্রেনের সমস্যাতেও এই ভেষজ হয়ে উঠতে পারে দারুণ কার্যকরী। এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা জলে ফুটিয়ে নিন। তারপর দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে নিন। আশা করছি সমস্যা অনেকটাই দূর হবে।
লবঙ্গের পাউডার
লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে অনেক উপকারী উপাদান। এই উপাদান খুব সহজেই আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করতে পারে। এক্ষেত্রে লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন বা লবঙ্গের পাউডার দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে নিন।
ল্যাবেন্ডার তেল
মাইগ্রেনের সমস্যা কমাতে চাইলে ল্যাবেন্ডার তেল হতে পারে অন্যতম হাতিয়ার। এক্ষেত্রে এই তেলে থাকা অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি গুণ এই সমস্যা কমায়। মাইগ্রেনের ব্যথা উঠলে এই তেল নাক দিয়ে ১৫ মিনিট শুকে নিন। সমস্যা কমবে।
ব্যায়াম
মাইগ্রেনের সমস্যা কমাতে চাইলে ব্যায়াম করতেই হবে। এক্ষেত্রে প্রাণায়াম হতে পারে আপনার অন্যতম হাতিয়ার। প্রাণায়াম করলেই সমস্যা থেকে মিলতে পারে মুক্তি। তবে এরপরও অনেকসময় মাথার ব্যথা হতে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তবেই হবে সমস্যার সমাধান।