29th May 2024
ভ্রমণ
তৃষা নন্দী
তাকদা
একহাতে কাঞ্চনজংঘা, অন্যহাতে সিকিমের নামচি। বর্ষার বাহারি তিস্তা নদী। মাঝে ইংরেজদের সাধের উপনিবেশ। তাকদা। চারহাজার ফুটউচ্চতায় চাবাগানের শীতলসবুজ। কীভাবে যাবেন শিয়ালদহ থেকে যেকোনও ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি ষ্টেশনে পৌঁছে দার্জিলিং। সেখান থেকে দূরত্ব মাত্র ২৮ কিলোমিটার। পাওয়া যায় প্রাইভেট কার।
কোথায় থাকবেন থাকার জন্য রয়েছে বেশ কিছু হোমস্টে। যোগাযোগ করতে পারেন, তাকদা হোমস্টেতে (ফোন- ৯৫৯৩৯৫০১৪৬), সাইনো হেরিটেজ লজ (ফোন- ৯৪৩৪৪৬২১৮০৬/৯৪৭৪৯৬৩১৮৩)
কোলাখাম
প্রেমিকযুগলের হাতে হাত, আর ভিড়ে ঠাসা লাভা থেকে বেরিয়ে যারা সত্যি সত্যিই বর্ষার দিনে একলা হতে চান, তাঁদের মনের মতো গন্তব্য কোলাখাম। নেওড়া ভ্যালি জঙ্গলের মাঝে সবুজ-নীলের মায়াবী কোলাখাম। রয়েছে অজস্র পাখি, ছাঙ্গে জলপ্রপাতের তীব্রগর্জন। কীভাবে যাবেন শিয়ালদহ থেকে যেকোনও ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি ষ্টেশনে পৌঁছে গাড়িতে চলে যান লাভা। দূরত্ব ১১৭ কিলোমিটার। লাভা থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরেই কোলাখাম।
কোথায় থাকবেন থাকার জন্য রয়েছে নেওড়া ভলি ইকোহাট (ফোন- ৯৬৭৪৯০০১০১), কোলাখাম রিট্রিট (ফোন- ৯৮৩০১৪৭৭১৮)
দাওয়াইপানি
অনেকেই বলেন গ্রামীণ দার্জিলিং। দার্জিলিং এর ভেতরেই দাওয়াইপানি আরেক দার্জিলিং। পাহাড়ের উপর থেকে নীচে দেখা যায় শহর দার্জিলিং এর আলোররোশনাই। পাশেই বুক চিতিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি দাওয়াইপানি নদী। এই নদীর জলে নাকি সেরে যায় রোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের নয়নের মণি দাওয়াইপানি।
কীভাবে যাবেন দার্জিলিং থেকে দূরত্ব মাত্র একঘন্টার। আর ঘুম ষ্টেশন থেকে পৌঁছে যাবেন কুড়ি মিনিটেই। প্রাইভেট গাড়ি বুঝ করে চলে যেতে পারেন।
কোথায় থাকবেন এখানে থাকার ব্যবস্থা খুবই সীমিত। যোগাযোগ করতে পারেন, দাওয়াইপানি হোমস্টে (ফোন- ৯৮৩ ০৬১৯৪২২/৯৮৩০৩৮১৩০৬/৯৮৩১০৬৭০৩০),
সামসিং-সুলতানেখোলা
নেওড়া ভ্যালির ভেতর 'দ্বিতীয় চেরাপুঞ্জি' সামসিং সুলতানেখোলা। অনেকেই ভুল করেন দুটো আলাদা জায়গা ভেবে। আসলে নদীর নাম সুলতানেখোলা। অপূর্ব নৈসর্গ, জঙ্গল আর মেঘের রাজ্য। তবে অন্যতম আকর্ষণ রংবেরঙের প্রজাপতি। বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতিরা দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায় এখানে। আর পাহাড়ি তিস্তাতো রয়েছেই। চলে যান অদূরেই সুলতানেখোলা নেচার ক্যাম্প, নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে। যাওয়া যায় রকি আইল্যান্ড কিংবা মূর্তিনদীতেও। পাখিপ্রেমীরা স্বস্তি পাবেন জেনে অ্যাশি বুলবুল, গ্রেট রাকেটেড টেল ড্রংগো বা গ্রে নাইউজারের মতো পাখিদের হামেশাই দেখা যায় এখানে। কীভাবে যাবেন শিলিগুড়ি থেকে প্রাইভেট কারে যেতে পারেন।তাছাড়া ট্রেনে গেলে নিউ মাল জংশনে নেমেও গাড়িতে যাওয়া যায়। দূরত্ব ২৮ কিমি।
কোথায় থাকবেন থাকতে পারেন সরকারী বাংলোতে। আগে থেকে বুক করে নিতে হবে। প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যাবেন www.wbfdc.com ওয়েবসাইটে।
পাউসি
পূর্ব মেদিনীপুরের ছোট্ট গ্রাম পাউসি। পাশেই বাগদা নদী। বর্ষার ধানী জমি সবুজময়। শুধুমাত্র বর্ষাতেই বাগদার নোনা জল মিঠে হয়ে যায়। বৃষ্টি আর প্রকৃতিকে নিভৃতে দেখার মন মতো জায়গা। পাশেই গড়ে উঠেছে ইকো ট্রারিজম কেন্দ্র মনচাষা। কীভাবে যাবেন হাওড়া থেকে তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস বা কাণ্ডারীএক্সপ্রেসে কাঁথি। সেখান থেকে গাড়িতে পাউসি। দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে দীঘাগামী বাসে এলে রসুলপুর নদ। ব্রিজ পেরিয়ে নামুন কালীনগর বাসস্ট্যান্ডে। ভ্যান রিক্সায় পৌঁছানো যায় পাউসি।
কোথায় থাকবেন থাকার জন্য অনবদ্য মনচাষা রিসর্ট (ফোন- ৯৪৩২২৩৬৮২৪/৯৮৩১০৯৫২৩৪)। মনোরম পরিবেশ এবং অঢেল বাঙালি খাওয়া। মেদিনীপুরের গহনাবড়ি থেকে নদীর টাটকা মাছ- কী নেই তাতে।
বাংরিপোসি
চারপাশে পাহাড়, টিলা আর নদীর মাঝে উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাংরিপোসি। শাল, শিমুল, মহুয়া আর বুড়িবালাম নদী। বৃষ্টির বাংরিপোসি ভারি মায়ার। ঘুরে আসতে পারেন কাছেই বনদুর্গার মন্দির থেকেও। চাঁদিপুরের সমুদ্র সৈকতও খুব কাছেই।
কীভাবে যাবেন কলকাতা থেকে দূরত্ব ২৩০ কিলোমিটার। গাড়িতে গেলে ঝাড়গ্রাম-লোধাগুলি জঙ্গল পেরিয়ে বাহাড়েগাড়া হয়ে। আর একটা গোপীবল্লভপুর-বারিপদা হয়ে। বালেশ্বর থেকে ট্রেনেও যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন থাকার জন্য যোগাযোগ করুন, হোটেল বাংরিপোসি (ফোন- ৯৮৩১৩০৯৫১২), খইরি রিসর্ট (ফোন- ১৪৩৭৮৭৭৭৩০), শিমলিপাল রিসর্ট (ফোন- ৯৪৩৭৬১২৭৪৭)