19th Sep 2024
প্রতিবেদন
নিজস্ব প্রতিনিধি
মহাভারত অনুযায়ী, প্রসিদ্ধ দাতা কর্ণের মৃত্যু হলে তার আত্মা স্বর্গে গমন করলে, তাকে স্বর্ণ ও রত্ন খাদ্য হিসেবে প্রদান করা হয়। কর্ণ ইন্দ্রকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে ইন্দ্র বলেন, কর্ণ সারা জীবন স্বর্ণই দান করেছেন, তিনি পিতৃগণের উদ্দেশ্যে কোনোদিন খাদ্য প্রদান করেননি। তাই স্বর্গে তাকে স্বর্ণই খাদ্য হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। কর্ণ বলেন, তিনি যেহেতু তার পিতৃগণের সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না, তাই তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে পিতৃগণকে স্বর্ণ প্রদান করেননি। এই কারণে কর্ণকে ষোলো দিনের জন্য মর্ত্যে গিয়ে পিতৃলোকের উদ্দেশ্যে অন্ন ও জল প্রদান করার অনুমতি দেওয়া হয়। এই পক্ষই পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত হয়।
ভাদ্র পূর্ণিমা তিথিতে এই পক্ষ সূচিত হয় এবং সমাপ্ত হয় সর্বপিতৃ অমাবস্যায়। উত্তর ভারত ও নেপালে ভাদ্রের পরিবর্তে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষকে পিতৃপক্ষ বলা হয়। হিন্দু আচার অনুযায়ী এই সময়ে প্রয়াত পিতৃপুরুষরা মর্ত্যে নেমে আসেন। এই সময়ে কতগুলি নিয়ম মেনে চলা খুবই জরুরি। জেনে নিন পিতৃপক্ষে কী করবেন আর কী করবেন না।
এইসময় কী কী নিয়ম মেনে চলবেন?
১.কোনরকম ধাতব পাত্রে রান্না করবেন না।
২.সরষের তেল, বেগুন, পেঁয়াজ, রসুন ছাড়া রান্না করবেন। দুগ্ধজাত দ্রব্য, গাওয়া ঘি রান্নায় ব্যবহার করবেন।
৩.যিনি তর্পণ করবেন, তাঁর এই সময় নখ কাটা বা চুল-দাড়ি কাটা উচিত নয়। চামড়ার তৈরি কোনও জিনিস যেমন বেল্ট বা জুতো পরবেন না, ওয়ালেট সঙ্গে রাখবেন না।
৪.শ্রাদ্ধকর্মের পর ব্রাহ্মণ ভোজন না-হওয়া পর্যন্ত নিজেরাও অন্ন গ্রহণ করবেন না।
৫.ব্রাহ্মণদের বাড়ির দক্ষিণ দিকে আসন পেতে মাটি, কাঁসা , রূপোর বাসন অথবা কলাপাতায় খাবার পরিবেশন করবেন।
৬.কোনোরূপ কাঁচ বা প্লাস্টিকের জিনিস ব্যবহার করবেন না।
৭.সেদ্ধ চালের পরিবর্তে আতপ চাল খাবেন।
৮.গাজর এবং মুলো এইসময় খেতে নেই। ডাল, কচু, শাপলা, উচ্ছে খাবেন না।
৯.তর্পণের মন্ত্রোচ্চারণের মাঝে কারও সঙ্গে কথা বলবেন না।
১০.দুধের পরিবর্তে পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে ইষ্টদেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদন করে নিজেরা খেতে পারেন।