6th Nov 2024
প্রতিবেদন
নিজস্ব প্রতিনিধি
কেন করা হয় ছট পুজো? কে এই দেবী?
ছট উৎসব আসলে সূর্যদেবের ব্রত পালনের উৎসব। এই সময় পূজিত হন স্বয়ং সূর্য দেবই। শাস্ত্র মতে তাঁর মধ্যেই নিহিত থাকে প্রাণশক্তি। তাঁর ভীষণ তেজে ধ্বংস হয় রোগ জীবাণুও। সেই সূর্যদেবের কৃপায় পরিবারের লোকজনকে সুস্থ রাখতে করা হয় এই পুজো। সূর্যদেবের সঙ্গে সঙ্গে পূজিতা হন ছঠি মাইয়াও। কেউ কেউ তাঁকে ছট লক্ষ্মীও বলেন। মতপার্থক্যে, ছঠি মাইয়াকে মা ষষ্ঠীর রূপ বা সূর্যদেবের বোনও মনে করা হয়। তাই পুজো করা হয় সূর্যদেবের। ষষ্ঠী পুজোর দিনে সন্ধ্যায় দান করা হয় সান্ধ্য অর্ঘ্য।
কথিত, রামচন্দ্র লঙ্কা বিজয় করে ফিরে এসে পুজো করেন কুলদেবতা সূর্যের। সেই পুজো নাকি হয়েছিল ছট পুজোর সময়েই। কার্তিক শুক্লা চর্তুথী থেকে কার্তিক শুক্লা সপ্তমী অবধি চলে এই পুজো। এই ব্রতে রয়েছে টানা ৩৬ ঘণ্টা উপোসের উপাচারও। নারী পুরুষ নির্বিশেষে পালন করেন এই ব্রত।
চারদিন ধরে চলা এই পুজোর অবাঙালি হিন্দুদের মধ্যে বেশ গুরত্ব রয়েছে। প্রথম দিন স্নানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ছট পুজোর। পরের দিন খরনা বা শুদ্ধিকরণ। সন্ধেবেলা প্রসাদ হিসাবে তৈরি করা হয়, গুড়ের ক্ষীর। সারা দিনের শেষে এই প্রসাদ খেয়েই উপোস ভাঙেন ব্রতপালনকারীরা। পরের দিন আবার অস্তগামী সূর্যকে দান করা হয় অর্ঘ্য। তারই সঙ্গে দান করা হয় ঠেকুয়া, কলা, মরশুমি ফল, আখ ইত্যাদি।এই পুজোর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এখানে কোনও রকম মূর্তি পুজো করা হয় না। বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে সঙ্গে সন্তান ও পরিবারের মঙ্গল কামনায় উপবাস করেন বাড়ির পুরুষেরাও।
পুজোর আগের দিন ব্রতীরা নখ কেটে , নদী বা পুকুরে স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্র পরে ছোলার ডাল ও লাউ দিয়ে রান্না করে ভাত খেয়ে তারপর উপবাস শুরু করেন। বছরের পর বছর এই নিয়মেই শুরু হয় ছট পুজো। পুজোর সময় উপবাসকারী মহিলারা তাদের নাক পর্যন্ত সিঁদুর লাগান। আসুন জেনে নিই ছট পুজোর সময় মহিলারা কেন নাক পর্যন্ত সিঁদুর লাগান।নাকে সিঁদুর লাগানোর পিছনে বিশ্বাস হল সিঁদুর যত লম্বা হবে স্বামীর আয়ু তত দীর্ঘ হবে।
এরই সঙ্গে কিছু টোটকা যদি পালন করা যায়, তা হলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
১.ছটের দিন ৬টা নারকেল নদীর জলে বা যে কোনও প্রবাহিত জলে ভাসিয়ে দিন।
২.ছটপুজোর দিন যাঁরা উপবাস রাখেন, তাঁদেরকে সিঁদুর পরান। এই কাজটি করতে পারলে খুব ভাল হয়।
৩.এই দিন সামর্থ্য অনুযায়ী নারকেল, সুপারি, আখ, কলা, বাতাবি লেবু এবং পানিফল দান করুন।
৪.অশ্বত্থ গাছের নীচে একটা ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালুন।
৫.এই দিন বাড়ির প্রত্যেক সদস্যকে ছোলার ডাল, করলা এবং লাউ খেতে দিন।
৬.যদি জন্মছকে রবির স্থান দুর্বল থাকে, তা হলে ছটপুজোর দিন একটা সূর্যযন্ত্রম স্থাপন করুন।
৭.এই দিন সূর্যদেবকে সামান্য গুড় নিবেদন করুন।