17th Nov 2024
ভ্রমণ
কমলেন্দু সরকার
এবারে শীতের ছুটি কমলালেবুর রাজ্যে কাটালে মন্দ হবে না। সেই রাজ্যে আবার খুঁজে পাওয়া যাবে একটুকরো ইয়োরোপ! আবার কেউ কেউ বলেন কাশ্মীর। দার্জিলিঙের কাশ্মীর! ইয়োরোপ হোক বা কাশ্মীর, জায়গাটি নিশ্চয়ই সুন্দর হবে। নইলে এমন তুলনা কেন! তাহলে আর দেরি কেন, দিনক্ষণ দেখে বেরিয়ে পড়া যাক। কিন্তু যাবটা কোথায়। জায়গার নাম? জায়গাটি হল উত্তরবঙ্গের সিটং।
যেখানে বাতাসে কমলালেবুর গন্ধ আর প্রকৃতির সুবাস। দুনিয়ায় কোনও কোলাহল স্পর্শ করে না এখানে। স্পর্শ করে না মালিন্য। এ এক অপূর্ব দুনিয়া! তাই এবার শীতের অল্পদিনের ছুটি কাটুক দার্জিলিঙের কাছে কমলালেবুর বাগানে। সিটংয়ের পরিচিতি কমলালেবুর বাগান হিসেবেই। প্রকৃতি নামে শিল্পীটি তাঁর রং-তুলিতে এঁকে রেখেছেন সিটং নামে নিখুঁত এই জায়গাটি। পাখির রাজ্যে কমলালেবুর বাগান।
অনেকেই বলেন, সিটংয়ের কিছুটা কাশ্মীর, কিছুটা ইয়োরোপ! সিটং মানেই কমলালেবুর গ্রাম আর কমলালেবুর কোয়ার মতো সুন্দর মিষ্টি! সিটং থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মৃতিবিজড়িত মংপু মাত্র আট কিমি। মহানন্দা অভয়ারণ্য থেকে মাত্র চার কিমি। পাহাড়ি নদী রিয়াং বয়ে চলেছে আপন মনে নিজের মতো কমলালেবু গ্রামের একপাশ দিয়ে। হোমস্টে থেকে মাত্র দুকিমি। হাঁটতে হাঁটতে চলে যান ভাল লাগবে। কাছেই আরও একটি চমৎকার জায়গা অহলদাড়া। হাঁটাপথে মাত্র তিন কিমি। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা অপূর্ব লাগে! কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে হলে এখানে আসতেই হবে। আর হোমস্টে থেকে উপত্যকার দৃশ্য চোখে পড়ে। সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখা আত্মার আরাম!
নিরিবিলি শান্ত গ্রাম সিটংয়ে নিভৃতে একা একা কাটাতে বেশ ভাল লাগে। উপভোগ করা যায় প্রকৃতির রূপ-মাধুর্য্য সিটং পটে আঁকা ছবির মতো। প্রকৃতির মোহিনী মায়া হাতছানি দেয়। রূপসৌন্দর্যের বার্তা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে রূপকথার সিটং। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নামে পাহাড়ে, অরণ্যে। কুলায় ফেরে ঝাঁকবাঁধা পাখি। ডানা মেলে পাখির নীড়ে ফেরার ব্যস্ততা দেখতে দেখতে হারিয়ে যেতে হয় আকাশ পথে। সিটং শুধু কমলালেবুর গ্রাম নয়, পাখিরও রাজ্য। দ্রুত পট পরিবর্তন হয় সিটং জুড়ে। নেমে আসে চাঁদ তার মায়াবী জ্যোৎস্না মেখে। ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র উপত্যকা জুড়ে। সে দৃশ্য মানসপটে তোলা থাকবে সারাজীবন! আশপাশেও ঘোরাঘুরির জায়গা প্রচুর। ঘুরতে গিয়ে ট্রেকিং যাঁদের পছন্দ, তাঁরা ভায়া লাবদা হয়ে চটকপুর চলে যান। কাছাকাছি একফালি স্বর্গ। স্বপ্নের মতো জায়গা! তবে ট্রেক করার আগে বন দফতরের অনুমতি নিতে হবে। না, এর জন্য কাঠখড় পোড়াতে হবে না।
কীভাবে যাবেন: শিয়ালদা থেকে এনজেপি। তারপর গাড়িতে। সিটং যাওয়ার গোটা তিনেক পথ আছে। তবে যে-পথেই যাবেন সেই পথেই মন ভরবে প্রকৃতির রূপমাধুরীতে। হোমস্টেতে আগাম বললে গাড়ি পাঠিয়ে দেবে। ভাড়া- ৩০০০-৩৫০০ হাজার টাকা। আর আশপাশে ঘোরাঘুরির জন্য লাগবে ৩২০০ টাকা।
নইলে যোগাযোগ করুন- Basak Cab Service- 08584075079/ 08250364852.
কোথায় থাকবেন; হামারো হোমস্টে। ভাড়া- প্রতিদিন মাথাপিছু থাকা-খাওয়া (প্রাতঃরাশ থেকে রাতের খাওয়া) ১২৫০-১৪০০টাকা।
মোবাইল- 097330 71716. এ ছাড়াও একাধিক হোমস্টে আছে।