5th Feb 2025

Highlights :

www.rojkarananya.com news

পশুপাখির বাড়ি: কুলডিহা, জোড়াচুয়া

6th Jan 2025

ভ্রমণ

নিজস্ব প্রতিনিধি


ভোরের ট্রেনেই বেরিয়ে পড়েছিলাম। বালেশ্বর নামা। আগেই বলা ছিল। তাই নিতে এসেছিল গাড়ি। ড্রাইভার বললেন, আমরা প্রথম যাব পঞ্চলিঙ্গেশ্বর। সেদিক পানেই ছুটল গাড়ি। এর আগেও আরও একবার এসেছিলাম পঞ্চলিঙ্গেশ্বর। চমৎকার জায়গা। পাহাড়ের ওপর ঝরনা চলেছে বয়ে। ঝরনার জলে হাত ডুবিয়ে পাঁচটি শিবলিঙ্গ স্পর্শ করা যায়। না, না, সাপখোপ বা অন্যকিছুর ভয়ভীতি নেই। অমন ঝরনার স্রোতে কিছু থাকে না। কিংবদন্তি আছে, সেই পুরাকালে জরসদ্ধ প্রতিদিন আসতেন এখানে শিবপুজো করতে। সেসব অন্য কথা। পঞ্চলিঙ্গেশ্বরের অপরূপ সৌন্দর্য। চারিদিকে পাহাড় আর ঘন অরণ্য। এখানে নাকি বাঘ আসে। পাহাড়ের ওপর একলাই থাকতেন এক সাধু। তাঁর কাছে শুনেছিলাম, বাঘ তাঁর ঘরের কাছে আসে। তাঁকে কোনওদিন কিছু বলেনি। পঞ্চলিঙ্গেশ্বরের প্রকৃতি মুগ্ধ করে। আগেও করেছিল, আবার করল।

সামান্য কিছু কুলডিহা যাত্রা হল শুরু। জঙ্গলের পথে যেতে যেতেই দেখলাম জায়েন্ট স্কুইরেল। বিড়ালের চেয়েও বড় কাঠবিড়ালি! এমন কাঠবিড়ালি দেখেছিলাম বটে কেরালার পেরিয়ার অরণ্যে। হাতি দেখিনি। হাতি দেখার নাকি ভাগ্য থাকা চাই। হরিণ প্রচুর। দেখাও দিল তারা। লেপার্ডও আছে। বড়ই রহস্যময় কুলডিহার অরণ্য! কলকাতার হাতের কাছেই আছে এমন এক বিস্ময়কর জঙ্গল। আছে মেলা পাখি, পাখির মেলা!

দেখতে কখন যে বেলা গড়িয়ে গেল, বোঝা গেল না। আসলে সুন্দরের কাছে ধরা সময় সে হরণ করে নেয় বোধহয়। অরণ্যে অন্ধকার নামে ঝুপ করে। এই আলো আছে, এই নেই। জঙ্গলে পূর্ণিমা-রাতের যেমন মাদকতা, তেমনই অমাবস্যা-রাতে থাকে শিহরন। শরীর, মন আরও বেশি শিহরিত করে যখন জোনাকির আলো উড়েঘুরে আলো দেয়। এ যেন মরুতে আলেয়ার মতো। কারা যেন আলেয়া হল আগুন-ভূত। তারা ভুলিয়ে ভালিয়ে নিয়ে যায়। পথিক হারিয়ে ফেলে তার পথ। জোনাকিও তাই। তারা আর জোনাকির আলো অদ্ভুত এক পরিবেশ তৈরি করে অমাবস্যার রাতে অরণ্য-অন্দরে। এর ভাললাগা ভাষার অবর্ণনীয়।

এমন এক পরিবেশে চমকে দেয় হঠাৎই হরিণের ডাক। সেই চমককে আর বাড়তি মাত্রা দিল কাঠঠোকরার ডাক। সে কী অন্ধকারে বসে গাছ ঠোকারাচ্ছিল। নাকি কোনও এক রাতপাখি ডেকে ডেকে যাচ্ছিল! জানি না, জানার কথাও নয়। জঙ্গলে বহুরকম রাতজাগা পাখি থাকে। তারা পাহারাদারের মতো সজাগ করে দেয় অরণ্য-বাসিন্দাদের। এমনকী আগত অরণ্য-অতিথিদেরও। তার সঙ্গে চলছিল ঝিঁঝির কনসার্ট। ওদের ঐকতানে রহস্য সৃষ্টি করছিল অরণ্য গভীর!

রহস্যময় অরণ্যের রাত কেটে যায় জঙ্গলের গভীরতায়। ক্রমশ আলো ফোটে দিকচক্রবালে। নীড় ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে পাখির দল। উড়ে যায় মুক্ত আকাশ জুড়ে। কেউ কেউ এসে বসে কাছে-দূরে। হয়তো জিজ্ঞেস করে, তোমরা ঠিক আছ তো? ভাল লেগেছে আমাদের জায়গাটি। হরিণের দলও ঘুরেফিরে তাকায়। ওরাও বোধহয় কুশল জিজ্ঞেস করে যায়। কয়েকটি বিশাল কাঠবিড়ালি ব্যস্ত আহারবিহারে। একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে বেরিয়ে পড়ি অন্যকোথাও, অন্যকোনওখানে।

কোথায় থাকবেন এবং কীভাবে যাবেন: কলকাতা থেকে কুলডিহার দূরত্ব কমবেশি ২৯০ কিমি। এখন শুধুমাত্র জনশতাব্দী চলছে। ট্রেনে গেলে বালেশ্বর স্টেশন নামতে হবে। সবচেয়ে ভাল থাকা-যাওয়ার জন্য যোগাযোগ করুন: অতনু ঘোষ, ফোন- 9883107891.

Archive

Most Popular

সিজন চেঞ্জের সমস্যা থেকে কীভাবে ভালো রাখবেন নিজের বাড়ির খুদে সদস্যটিকে কে?

5th Feb 2025

স্বাস্থ্য

সুদেষ্ণা ঘোষ

Read More
আপেলের বীজ

5th Feb 2025

সাহিত্য

রজতশুভ্র মজুমদার

Read More